দোলের দিন শহরের বড় বড় পুকুরের সামনে ছিল পুলিশি প্রহরা। অথচ, রবিবার রং খেলার পরে পুকুরে স্নান করতে নেমে দু’টি ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই দু’টি পুকুরের সামনেই পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং দু’টি ঘটনাই রিজেন্ট পার্ক এলাকার। একটি দীনেশনগর, অন্যটি নন্দীপাড়ার।
দীনেশনগরের ঘটনায় যে যুবকের মৃত্যু হয়েছে, তাঁকে ডুবে যেতে দেখেন পুলিশকর্মীরা। তবু তাঁরা কিছু করতে পারেননি। তাঁদের কাছে দড়ি, লাইফ ভেস্ট, রবার রিং-এর মতো সুরক্ষার কোনও সরঞ্জাম ছিল না। ওই ঘটনায় পুলিশকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়। সোমবার লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ সব দিনে পুকুরের কাছে যে পুলিশকর্মীরা থাকবেন, তাঁদের কাছে ডুবন্ত কাউকে বাঁচানোর সরঞ্জাম রাখা যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় মৃতের নাম রাধেশ্যাম পোদ্দার। আর নন্দীপাড়ার মহিষপুকুরে ডুবে মারা গিয়েছেন বঙ্কু চক্রবর্তী (৫৫)। পুলিশ জেনেছে, দু’জনেই মদ্যপান করে পুকুরে স্নান করতে নামেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা রাধেশ্যাম দীনেশনগরে এক বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। রং খেলার পরে বন্ধুদের সঙ্গে পুকুরে নেমেছিলেন। রাধেশ্যাম সাঁতার জানতেন না। এলাকাবাসীরা জানান, রাধেশ্যাম ঘাট দিয়ে নামেননি। অন্য একটি অংশ দিয়ে সরাসরি জলে নামার চেষ্টা করেন। তখনই পা হড়কে গভীরে তলিয়ে যান। পুকুরের দু’ধারে পুলিশ থাকলেও রাধেশ্যামকে উদ্ধার করতে কেউই জলে নামেননি। শুধু রিকশাচালক এক যুবক ঝাঁপ দেন। কিন্তু রাধেশ্যামকে বাঁচানো যায়নি।
অন্য ঘটনায় নন্দীপাড়ার বাসিন্দা, পেশায় বেসরকারি অতিথিশালার ম্যানেজার বঙ্কু চক্রবর্তী দুপুরে বাড়ি থেকে স্নানের জন্য বার হন। বিকেল গড়িয়ে গেলেও তিনি না ফেরায় বাড়ির লোকজন খোঁজ শুরু করেন। পুকুরের পাড়ে ওই ব্যক্তির জুতো, গেঞ্জি পড়ে থাকতে দেখা যায়। ডুবুরি নামিয়ে সন্ধ্যায় পুকুর থেকে বঙ্কুবাবুর দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের সন্দেহ, অনেকের সঙ্গে ওই ব্যক্তিও স্নান করতে নামেন। কিন্তু কখন তিনি তলিয়ে গেলেন, তা কেউ টের পায়নি। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা নেশাগ্রস্ত ছিলেন।’’