অনিয়ম: ব্যারাকপুর লালকুঠি উড়ালপুলের মুখে এ ভাবেই নিত্য বসে বাজার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
শহরে ফের ভেঙে পড়ল জীর্ণ বাড়ির একাংশ। জখম হলেন বৃদ্ধ ভাই ও বোন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নারকেলডাঙা থানার গড়পার রো়ডের ঘটনা। আহত রুবি ঘোষ (৬৫) হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর বছর দুয়েকের বড় দাদা প্রতাপ ঘোষের পায়ে একাধিক সেলাই পড়লেও আপাতত তিনি বাড়িতেই রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ৯৪/এ গড়পার রোড়ের ওই বাড়িতে থাকেন রুবিদেবী ও প্রতাপবাবু। দু’জনেই অবিবাহিত। প্রতাপবাবু বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। পরে অবসর নেন। বাড়ির একতলায় মশার দাপট। তাই দু’জনেই দোতলার ঘরে থাকেন।
বৃহস্পতিবার রাত একটা নাগাদ হঠাৎ ভারী কিছু ভেঙে পড়ার আওয়াজে আশপাশে থাকা ফুটপাথের লোকজন ছুটে আসেন। তাঁরা দেখেন, বাড়ির ছাদ থেকে চাঙড় ভেঙে পড়েছে। দোতলা থেকে প্রতাপবাবু সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন। পড়শিরাই ছুটে যান দোতলার ঘরে। খবর যায় থানায়। পরে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বৃদ্ধ দাদা-বোনকে উদ্ধার করে এনআরএসে ভর্তি করে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, প্রতাপবাবুর পা না ভাঙলেও কেটে গিয়েছে। ন’টি সেলাই করতে হয়েছে।
তবে ওই ঘটনায় ভাল মতো জখম হয়েছেন রুবিদেবী। তাঁর হাতে-পায়ে ছাড়াও কোমরে লেগেছে। রুবিদেবীকে নীলরতন সরকার হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করা হয় গড়পার রোড সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
ঘটনার পরে পুরসভার লোকজন এসে বা়ড়িটি বিপজ্জনক বলে নোটিস টাঙিয়ে দিয়ে গিয়েছে। বাড়ির মালিক প্রতাপবাবু জানান, বাড়িটি পুরনো। মেরামতির প্রয়োজন রয়েছে। কয়েক মাস আগে মিস্ত্রি এসে দেখে গেলেও অনবরত বৃষ্টিতে কাজ শুরু করা যায়নি। পড়শিরা জানান, বা়ড়িটির ভিতরে প্রচুর জায়গা। তাই অনেক প্রোমোটারের নজর রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, এই ঘটনার পরে বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দিয়েছে কেউ। প্রতাপবাবু একতলায় একটি তক্তপোশের উপরে আধশোয়া। ঘর অন্ধকার। মশার দাপটে টেকা দায়। প্রতাপবাবুর কথায়, ‘‘আত্মীয়স্বজন থেকেও নেই। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমি আর বোনই থাকি। ওই দুর্ঘটনার পরে পুলিশ ও পুরসভা এসেছিল। তার পরে আর কেউ খোঁজ নেয়নি।’’ ওই বা়ড়ি সংলগ্ন ফুটপাথের এক ফুলের দোকানি আর তাঁর বন্ধুরাই এখন বৃদ্ধের দেখাশোনা করছেন।