—প্রতীকী চিত্র।
তাঁদের স্বামীদের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই রোষে অ্যাসিড ছুড়ে পুড়িয়ে দেওয়া হল এক মহিলার মুখ। এমনই অভিযোগ উঠেছে দুই মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনার সময়ে তাঁদের সঙ্গে আরও তিন জন ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। রবিবার লেক টাউন থানার পাতিপুকুরের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার বিকালে রাজিয়া ওরফে খুকু বিবি লেক টাউনে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। তখনই পাতিপুকুর রেলস্টেশন সংলগ্ন ঢিপির মাঠের কাছে তাঁর পথ আটকায় বুলু বিশ্বাস এবং সুমিতা ভাস্কর নামে দুই মহিলা। তাঁদের সঙ্গে আরও দুই মহিলা এবং এক পুরুষ ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। সোমবার খুকু জানান, তিনি হাঁটা না থামালে তাঁকে বুলু, সুমিতারা জাপটে ধরে। এর পরে অ্যাসিডের বোতল খুলে তাঁকে খাওয়ানোর চেষ্টা করে তারা। কিন্তু খুকু বাধা দিলে অ্যাসিড ছিটকে পড়ে তাঁর ডান চোখ এবং ঘাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অজিত দাস নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ‘‘অ্যাসিড খাওয়ানোর চেষ্টা করা হলে খুকু নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। তা করতে গিয়ে চোখে, ঘাড়ে, বুকে অ্যাসিড পড়ে যায়। খুকুর উপরে ওই আক্রমণ দেখে আমরা এগিয়ে আসি। নইলে আরও বড় বিপদ হতে পারত।’’ জখম খুকুকে তড়িঘড়ি আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে বুলু ও সুমিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
ঘটনার তদন্তে নেমে বুলু এবং সুমিতাকে প্রথমে আটক করে লেক টাউন থানার পুলিশ। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের এ দিন বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশের কাছে ধৃতেরা দাবি করেছে, বুলুর স্বামী স্বপন বিশ্বাস এবং সুমিতার স্বামী লক্ষ্মণ ভাস্করের সঙ্গে অভিযোগকারিণীর সম্পর্ক ছিল। সেই রাগ থেকেই পরিকল্পনা করে এই কাজ করে ধৃতেরা।
স্থানীয়দের একাংশ জানান, এর আগে বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার খুকুর সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছেন বুলু। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক প্রসঙ্গে খুকু বলেন, ‘‘স্বপনের সঙ্গে তিন বছর আগে সম্পর্ক ছিল। এখন কিছু নেই। কবে কী ছিল তা নিয়ে প্রায়ই আমার সঙ্গে বুলু ঝগড়া করত। সুমিতার স্বামীকে দাদু বলি। ওঁর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থাকতে পারে?’’ অভিযোগকারিণীর সঙ্গে আগে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করলেও স্বপনের দাবি, রবিবার ঘটনাস্থলে তাঁর স্ত্রী ছিলেন না।
ঘটনাক্রম সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য এমন হামলার খবর সচরাচর শোনা যায় না। এই ঘটনার জেরে বুলুর স্বামীর দোকান ভাঙচুর করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তা নিয়ে অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।