মোটরবাইক ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশই শুধু নয়, বেশি ক্ষণ আটকে রাখলে তাঁদের জঙ্গলমহলে বদলি করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন দুই যুবক। কারণ, তাঁরা গোঘাটের বিধায়কের ডান হাত। এমন হুমকিতে পুলিশ প্রথমে থতমত খেলেও শেষমেশ শ্রীঘরে ঢুকেছেন দুই যুবক। ধৃতদের নাম দীপঙ্কর চক্রবর্তী ও সম্রাট পাল।
টিটাগড় থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, দীপঙ্কর ও সম্রাট আসলে পানিহাটির বাসিন্দা। মঙ্গলবার ব্যারাকপুর আদালত তাঁদের তিন দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেলে ব্যারাকপুরের চিড়িয়ামোড়ে গাড়ি থামিয়ে কাগজ পরীক্ষা করছিলেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা। একটি বাইককে আটকানো হয়। দুই আরোহীর এক জন পুলিশ আধিকারিকের কাছে গিয়ে বলেন, ‘‘আমরা গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদারের লোক। গাড়িটা তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিন।’’
এর পরেই ওই যুবক হাতের মোবাইল এগিয়ে দেন ওই পুলিশ আধিকারিকের দিকে। বলেন, ‘‘ধরুন, এমএলএ কথা বলবেন।’’ পুলিশ জানায়, ফোনের ওপার থেকে তাঁকে বলা হয়, ‘‘গাড়িটা ছেড়ে দিন। ওঁরা আমার লোক। না হলে অসুবিধা হবে।’’ ফোনে ধমকের ধরণে সন্দেহ হয় পুলিশের। এরই মধ্যে ব্যারাকপুর ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে এক জন বলেন, ‘‘গোঘাটের এমএলএ মানস মজুমদার বলছি। আমার লোকদের এখনও ছাড়েননি?’’ ওই যুবকও তখন পুলিশকে হুমকি দিতে থাকেন, ‘‘আমাকে এখনই না ছাড়লে বিপদে পড়তে হবে। ট্র্যাফিকের ওসি-কে জঙ্গলমহলে বদলি করা হবে।’’
ইতিমধ্যে এক পুলিশ আধিকারিক সরাসরি মানসবাবুকে ফোন করেন। সব শুনে আকাশ থেকে পড়েন তিনি। জানিয়ে দেন, কাউকে তিনি বাইকে করে কাজে পাঠাননি। পুলিশ ওই যুবকের মোবাইল থেকে শেষ ডায়াল করা নম্বরে ফোন করতেই দেখা যায়, কিছুটা দূরে অন্য যুবকের ফোন বাজছে। তাঁকে ধরে আনা হয়। জানা যায়, ওই যুবকই নিজের ফোন থেকে পুলিশকে ধমক দিচ্ছিলেন। দু’জনকেই টিটাগড় থানার হাতে তুলে দেয় ট্র্যাফিক পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের কাছে শাসক দলের প্রায় সব বিধায়কের ফোন নম্বর রয়েছে। আগেও তাঁরা এ ভাবে গাড়ি ও বাইক ছাড়িয়েছেন। মানসবাবু বলছেন, ‘‘এটা না হয় জানা গেল। কত জন না জানি এমন করছেন!’’