প্রিয়াকুমারী চৌরাসিয়া
এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অত্যাচার এবং অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করল পুলিশ। তরুণীর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির পরিজনেদের বিরুদ্ধে তাঁকে মেরে ফেলার অভিযোগ জানিয়েছেন বাপের বাড়ির পরিজনেরা। ঘটনাটি বেলুড়ের গিরিশ ঘোষ রোড এলাকার।
পুলিশ সূত্রের খবর, গিরিশ ঘোষ রোডের বাসিন্দা জুটমিল শ্রমিক বসন্ত চৌরাসিয়ার সঙ্গে সাত বছর আগে বিয়ে হয় খামারপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রিয়াকুমারী চৌরাসিয়ার। ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ির দোতলার ছাদ থেকে কোনও ভাবে তিনি পড়ে যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাঁকে জয়সওয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই ২৪ নভেম্বর, শনিবার সন্ধ্যায় প্রিয়ার (২৫) মৃত্যু হয়।
তরুণীর বাবা হরিশচাঁদ চৌরাসিয়া অভিযোগে জানান, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য তাঁর মেয়েকে মারধর করতেন বসন্ত এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা। এ নিয়ে আগেও কয়েক বার থানায় ডায়েরি করা হয়েছে। রবিবার হরিশবাবু বলেন, ‘‘আমার মেয়েকে ওঁরা মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছেন।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, প্রিয়ার পাকস্থলীতে অ্যাসিড মিলেছে। সম্ভবত অ্যাসিড খাওয়ার পরেই তিনি ছাদ থেকে নীচে পড়ে যান। তবে কেউ তাঁকে ফেলে দিয়েছেন না কি তিনি নিজেই ঝাঁপ দিয়েছেন তা তদন্ত করে দেখছে বেলুড় থানার পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার পর থেকে পলাতক বসন্তেরা। এমনকি প্রিয়ার চার বছরের ছেলে এবং দু’বছরের মেয়েরও খোঁজ মিলছে না। পুলিশ ওই বাচ্চাদের খোঁজ শুরু করেছে। যাতে তাদের সঙ্গে কথা বলে কিছু জানা সম্ভব হয়। এ দিন হরিশবাবু আরও জানান, অশান্তির মিটমাট করতে ১৬ নভেম্বর বিকেলে প্রিয়ার বাড়িতে যান তাঁর এক ভাই মঙ্গলপ্রসাদ। কিছু ক্ষণ কথার্বাতা বলে তিনি বাড়ি চলে আসার পরেই বসন্ত তাঁকে ফোন করে জানান, প্রিয়া ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছেন। মঙ্গলপ্রসাদ জয়সওয়াল হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, প্রিয়ার মাথার পিছন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এ দিন প্রিয়ার মা কলাবতীদেবী বলেন, ‘‘ওঁরাই মেয়েকে মেরে ফেলেছেন। মেয়ে যখন আর নেই তখন ওঁদের শাস্তি চাই।’’