শিবানী চক্রবর্তী
দমদমের মল রোড এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ার মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলবার রক্তাক্ত অবস্থায় এক প্রতিবেশীর বাড়ি গিয়ে কোনওমতে সাহায্য চেয়েছিলেন তিনি। দমদমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই মৃত্যুর কারণ। কিন্তু আঘাত কী ভাবে লাগল, তা ঘিরেই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। শিবানী চক্রবর্তী (৬৩) নামে ওই প্রৌঢ়ার পরিবারের অভিযোগ পেয়ে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে দমদম থানার পুলিশ।
বুধবার মৃতার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রৌঢ়ার মাথায় গভীর ক্ষত ছিল। তাঁর ফ্ল্যাটে জিনিসপত্র লণ্ডভণ্ড করা ছিল। একটি শিল-নোড়াও পাওয়া গিয়েছে বিছানার তলা থেকে। ঘরের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত পড়ে থাকতে দেখেছেন তাঁরা। এমনকী মৃত্যুর আগে প্রৌঢ়ার কাছ থেকে জানা গিয়েছে, এক কাপড় বিক্রেতা এসেছিলেন। যদিও কে হামলা চালিয়েছেন, তা স্পষ্ট ভাবে জানাতে পারেননি তিনি। এই ঘটনায় ওই কাপড় বিক্রেতার হাত আছে বলেই ধারণা পরিবারের।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রৌঢ়ার মেয়ে মৌমিতা চক্রবর্তী জানান, মল রোডের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তাঁর মা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পড়শিরাই হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। প্রৌঢ়ার কিছু গয়না মিলছে না বলেও দাবি পরিবারের। খবর পেয়ে মঙ্গলবারই হাসপাতালে যায় পুলিশ। বুধবার দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়।
দক্ষিণ দমদমের মল রোড এলাকার কে বি সরণির ওই আবাসনে মৃতার পড়শিদের একাংশ জানান, মঙ্গলবার দুপুরে পাশের বাড়িতে বেল বাজান ওই প্রৌঢ়া। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাথায় গভীর ক্ষত দেখে মনে হচ্ছে, কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে তাঁকে।
ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আবাসনে। পুলিশ জানায়, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই আবাসনে কে কে এসেছিল, সে বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
তবে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ জানিয়েছে, খুনের অভিযোগ দায়ের হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের জেরেই মৃত্যু। পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে মৃত্যু না কি দুষ্কৃতী হামলায় প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ব্যারাকপুরের ডিসি (২) ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, ‘‘বহিরাগত এসে ফ্ল্যাটে লুঠতরাজ চালিয়েছে, এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ এখনও মেলেনি। তবে এক জন কাপড়ওয়ালা এসেছে বলে জানা যাচ্ছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’