কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে আহত হলেন উপাচার্য। কলেজ সূত্রে খবর, সোমবার উপাচার্যের দফতরের সামনেই দু’পক্ষে তুমুল সংঘর্ষ-ভাঙচুর চলে। এক গোষ্ঠীর অভিযোগ, উপাচার্যই অপর গোষ্ঠীকে ডেকে এনেছিলেন। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপাচার্য।
প্রসঙ্গত, সংস্কৃত বিভাগের পিএইচডি-র তালিকা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক লগ্নজিতা চক্রবর্তী-সহ আট জনের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হয় তালিকায় সাধারণ প্রার্থীদের নামে ভুল নেই। নতুন করে তালিকায় কিছু রদবদল ঘটিয়ে ফের প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় লগ্নজিতা এবং অন্য পড়ুয়ারা এ দিন উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান। অভিযোগ, উপাচার্য দেখা করেননি। এর পরে অবস্থানে বসেন লগ্নজিতা এবং তাঁর সমর্থকেরা। সন্ধ্যায় সেখানে আসেন লগ্নজিতার বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা আব্দুল কাইয়ুম মোল্লা এবং মণিশঙ্কর মণ্ডল। উপাচার্যকে অবরোধের মধ্যে থেকে তাঁরা বার করে নিয়ে যান। সেই সময় তাঁদের বিরুদ্ধে অবরোধকারীদের ব্যাপক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই ছাত্র সংসদ গড়তে মাঠে নামতে হয়েছিল স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তখন জোড়াতালি দিয়ে সংসদ তৈরি হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের সামনে এসে পড়ে। যা এই মুহূর্তে চূড়ান্ত আকার নিয়েছে। বারবারই অভিযোগ উঠছে, উপাচার্য একটি গোষ্ঠীকে সমর্থন করছেন।
এ দিনের ঘটনার পরে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও। তাতে দেখা যায়, উপাচার্যের দফতরের সামনে ধস্তাধস্তির মধ্যে কাঁদছেন লগ্নজিতা। রয়েছেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সহ উপাচার্য (অর্থ) মীনাক্ষী রায়। লগ্নজিতা বলেন, ‘‘উপাচার্য কাইয়ুম, মণিশঙ্করদের ডেকে এনেছিলেন। ওরা প্রচুর বহিরাগতকে নিয়ে এসে অবস্থানকারীদের মেরেছে।’’ কাইয়ুমের বক্তব্য, ‘‘উপাচার্যকে আটকে রাখা হয়েছিল। আমরা সুষ্ঠু ভাবে তাঁকে বার করে এনেছি।’’ উপাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কেন ডাকব? ধস্তাধস্তিতে আমারই পিঠে আঘাত লেগেছে।’’