তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’, ঘর ভাঙচুর

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে রবিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০২:১৬
Share:

ঝামেলা: ভাঙচুরের পরে এলাকা। (ডান দিকে) হামলায় আহত এক ব্যক্তি। রবিবার, আনন্দপুরে। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমালের জেরে উত্তেজনা ছড়াল আনন্দপুরের পূর্বপাড়া এলাকার একটি বস্তিতে। পূর্বপাড়ার ওই বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাশের পাড়া হোসেনপুর থেকে এক দল তৃণমূল সমর্থক তাঁদের বাড়িতে লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তৃণমূলের সমর্থক হয়েও তাঁরা বিজেপিতে ভোট দিয়েছেন এমনটা দাবি করে তাঁদের ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। যদিও হোসেনপুরের বাসিন্দারা এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে রবিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ। পূর্বপাড়ার এক বাসিন্দা সুধীর ভক্ত বলেন, ‘‘আমরা তখন ঘুমিয়েছিলাম। হোসেনপুরের বেশ কয়েক জন তৃণমূল সমর্থক লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ চালায়। কয়েক জন যুবককে ঘুম থেকে তুলে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। এমনকি মহিলাদেরও মারধর করে।’’ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ঘটনায় সাত থেকে আট জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছোটু সিংহ নামে এক যুবক গুরুতর জখম হন।

রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, এলাকার পরিস্থিতি তখনও থমথমে। ঘটনাস্থলে রয়েছে পুলিশ বাহিনী। রাস্তার ধারে ফুটপাতে বসে রয়েছেন পূর্ব পাড়ার বাসিন্দারা। ওই পাড়ার বাসিন্দা মিনতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যারা আক্রমণ চালায়, তারাও তৃণমূলের সমর্থক। ওরা আমাদের পাড়ায় ভাঙচুর চালানোর সময়ে জানতে চায় কেন আমরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছি। আমরা বারবারই জানাই যে আমরা বিজেপিকে ভোট দিইনি। কিন্তু ওরা আমাদের কথা শোনেনি। ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করে।’’

Advertisement

এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাভেদ খান ও ১০৮ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মণীন্দ্র দত্তের গোষ্ঠীর মধ্যে ওই গোলমাল। এই অশান্তি অনেক দিন ধরেই চলছে। পূর্বপাড়ার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা ব্লক সভাপতি মণীন্দ্র দত্তের অনুগামী। অথচ হোসেনপুরের বাসিন্দারা মাঝেমধ্যেই তোলা তুলতে তাদের পাড়ায় হামলা করে। পূর্ব পাড়ার এক মহিলা গীতা খাটুয়া বলেন, ‘‘বিভিন্ন অজুহাতে যখন তখন ওরা টাকা চায়। এই নিয়ে আমরা স্থানীয় থানায় ডেপুটেশনও দিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।’’

এ দিন পূর্বপাড়ার পাশেরই এলাকা হোসেনপুরের কোনও বাসিন্দাই এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। এক বাসিন্দা শুধু বলেন, ‘‘যা জানার থানায় গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন। এই বিষয়ে বলার মতো পাড়ায় কেউ নেই।’’ আনন্দপুর থানার পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত।

এলাকার বাসিন্দারা ১০৮ নম্বর ব্লকের সভাপতি মণীন্দ্র দত্ত ও মন্ত্রী জাভেদ খানের গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা বললেও মণীন্দ্রবাবু এই বিষয়ে বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এই নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

অন্য দিকে জাভেদ খানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অনেক বার তাঁকে এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপ করেও কোনও উত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন