দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে জল থইথই

হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বিকেল পর্যন্ত আলিপুরে ৫.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৪ সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা ২ ডিগ্রি কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০১:২৫
Share:

ডুবন্ত: এক পশলা বৃষ্টির পরে ভিআইপি রোডে এ ভাবেই জল ঠেলে এগোচ্ছে গাড়িটি। রবিবার, কৈখালির কাছে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

বৃষ্টিভাগ্যে মহানগরকে হতাশ করেছিল জুন। বৃষ্টির জন্য হাপিত্যেশ করে বসেছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতা বদলাতেই বদলে গেল ছবিটা। মেঘলা আকাশের সঙ্গে বৃষ্টির উপহার নিয়ে এসে শুরুতেই রীতিমতো আশা জাগাচ্ছে জুলাই!

Advertisement

রবিবার সকাল থেকেই কলকাতা এবং লাগোয়া জেলাগুলির আকাশ মেঘে ঢেকে গিয়েছিল। শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। মেঘলা আকাশের জেরে তাপমাত্রাও বাড়েনি এ দিন। সব মিলিয়ে ছুটির দিনের মেজাজটাও বেশ জমে গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, এমন মেজাজ আরও দিন কতক মিলবে। কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলিতেও কমবেশি বৃষ্টি চলবে।

হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বিকেল পর্যন্ত আলিপুরে ৫.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৪ সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা ২ ডিগ্রি কম।

Advertisement

সাতসকালে ঘুম থেকে উঠেই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বাজারে ছুটেছিলেন মধ্যমগ্রামের মদন মুখোপাধ্যায়। ইলিশের টানে। কিন্তু মনপসন্দ ইলিশ মেলেনি। বাধ্য হয়ে পাঁঠার মাংস নিয়েই বাড়ি ফিরেছেন। একে ছুটির দিন, তার মধ্যেই টানা দেড় ঘণ্টা বৃষ্টি। ফলে রাস্তায় গা়ড়ির চাপ ছিল না সে ভাবে। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এ দিন যাঁদের বাড়ির বাইরে যেতে হয়েছে তাঁদের আর যান-যন্ত্রণা পোহাতে হয়নি। বিরাটির রিঙ্কি দাস সকাল থেকেই মেয়ের জন্মদিনের রান্না নিয়ে ব্যস্ত। বৃষ্টির দাপট দেখে বলছিলেন, ‘‘এত আয়োজন করলাম। অতিথিরা আসতে পারবেন তো!’’ দুপুর গ়ড়াতেই অবশ্য বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল। কিন্তু বর্ষা তার মেজাজ হারায়নি।

গোটা জুন মাসে কার্যত ঝিমিয়েই ছিল বর্ষা। এমন করে গা-ঝা়ড়া দিল কী ভাবে? আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ড ও লাগোয়া দক্ষিণবঙ্গে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। তার উপরে বঙ্গোপসাগরে দানা বেঁধেছে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত।
গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের উপরে সক্রিয় রয়েছে নিম্নচাপ অক্ষরেখাও। তার ফলে সাগর থেকে হু হু করে জোলো হাওয়া ঢুকছে এবং তা ঘনীভূত হয়ে বর্ষার মেঘ তৈরি করছে। হুড়মুড়িয়ে এই বৃষ্টি বর্ষার চরিত্র নয়। তার বদলে মেঘলা আকাশ, দিনভর দফায় দফায় ঝিরঝির করে বৃষ্টিটাই বর্ষার লক্ষণ। ‘‘সে দিক থেকে এখন বর্ষার আদর্শ পরিস্থিতি রয়েছে,’’ বলছেন এক আবহবিদ।

এ বছর জুনে দুর্বল বর্ষার জন্য গোটা পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। মৌসম ভবন সূত্রের খবর, ১ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ২১ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জোরালো বর্ষার হাত ধরেই ঘাটতি পূরণের আশা করছেন আবহবিদেরা। জোড়া ঘূর্ণাবর্তের কৃপায় সেই ঘাটতি কতটা মেটে সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement