মিলছে না পানীয় জল, এলাকায় জমছে আবর্জনাও

ভূগর্ভস্থ জলই ভরসা। কিন্তু সে জলেও আয়রন এত বেড়েছে যে পান করা যাচ্ছে না। মাস আটেক ধরে এখানে পানীয় জলের গাড়ি পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। কাকভোরে উঠে সেই জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আবর্জনার গাড়ি আসে বাঁশি বাজিয়ে। কিন্তু সব বাড়ি থেকে ময়লা নেয় না। আর সেই আবর্জনা জমা হয় রাস্তার ধারের পুকুর-ডোবাগুলিতে। এ ভাবেই বুজে যাচ্ছে এলাকার বেশিরভাগ পুকুর। পুর-পরিষেবা নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ বিদ্যাসাগর কলোনির ১, ২, ৩, ৪ ব্লকের বাসিন্দাদের। এটি কলকাতা পুর এলাকার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪২
Share:

আবর্জনায় ঢাকা পড়েছে টিউবওয়েলও। —নিজস্ব চিত্র।

ভূগর্ভস্থ জলই ভরসা। কিন্তু সে জলেও আয়রন এত বেড়েছে যে পান করা যাচ্ছে না। মাস আটেক ধরে এখানে পানীয় জলের গাড়ি পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। কাকভোরে উঠে সেই জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আবর্জনার গাড়ি আসে বাঁশি বাজিয়ে। কিন্তু সব বাড়ি থেকে ময়লা নেয় না। আর সেই আবর্জনা জমা হয় রাস্তার ধারের পুকুর-ডোবাগুলিতে। এ ভাবেই বুজে যাচ্ছে এলাকার বেশিরভাগ পুকুর। পুর-পরিষেবা নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ বিদ্যাসাগর কলোনির ১, ২, ৩, ৪ ব্লকের বাসিন্দাদের। এটি কলকাতা পুর এলাকার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, এই ওয়ার্ডের অধিকাংশ অঞ্চলই কলোনি। বিদ্যাসাগর কলোনির চারটি ব্লক, রামগড় কলোনির এ ব্লক এবং সি ব্লকের অংশত, বাঘাযতীনের এইচ ব্লক ও শ্রী কলোনির তিনটি ব্লকের পুরোটাই এই ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। লোটাস পার্ক ও জোড়া বাগান অঞ্চলটি ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিজস্ব এলাকা। ৯১০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে থাকা ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রায় ৩০ হাজার। বাসিন্দাদের দাবি, এই অঞ্চলের জল সমস্যা দীর্ঘ দিনের। প্রধানত তাঁরা ভূগর্ভস্থ জলই ব্যবহার করেন। জলস্তর নেমে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন না দেওয়ায় গত আট বছর নতুন টিউবওয়েল বসেনি। আর আছে গভীর নলকূপ। এই ভূগর্ভস্থ জলে খুব বেশি আয়রন থাকায় তা পান করা যায় না বলে জানালেন বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা শেফালি সামন্ত জানান, পাশের ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘাযতীনের কিছুটা এলাকায় এবং পল্লিশ্রী এলাকায় গার্ডেনরিচের জল ঢোকে। ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশের বাসিন্দারা সেখান থেকে জল আনেন। অন্য এক বাসিন্দা সমরকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ভোরে জল নিতে চার তলার ফ্ল্যাট থেকে নামতে গিয়ে পা ভেঙে বিছানায় পড়েছিলাম দেড় মাস। তাই এখন দৈনিক ৪০ টাকা খরচ করে খাওয়ার জল কিনছি। পুরসভার দেওয়া জল যথেষ্ট নয়। আয়রন থাকায় বাথরুমের পাইপ, সিস্টার্ন সব কিছু প্রতি বছর পরিষ্কার করাতে হয়। পরিশোধিত জল বিক্রির ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে।’’

Advertisement

বর্জ্য নিয়েও বড় সমস্যা রয়েছে। এই ওয়ার্ডে নিযুক্ত পুরসভার সাফাইকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা রতন দাশগুপ্ত-সহ অনেকেই। অভিযোগ, বাড়িগুলি থেকে অলিখিত ভাবে মাসে একশ টাকা করে আদায় করেন কয়েক জন সাফাইকর্মী। যাঁরা তা দেন না, তাঁদের বাড়ি থেকে নিয়মিত আবর্জনা সংগ্রহ হয় না। এলাকার বেশ কিছু পুকুর ও ডোবায় ময়লা ফেলে জলাশয় বুজিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগও করছেন এলাকাবাসী।

পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গার্ডেনরিচ জল প্রকল্প থেকে আরও পাঁচ কোটি গ্যালন জলের ব্যবস্থা হচ্ছে। এই এলাকায় আগামী দিনে সেই পানীয় জল পৌঁছে দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। বর্জ্য সাফাই প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের জবাব, পুরভোটের কারণে এই মুহূর্তে সক্রিয় নয় বোর্ড। নব নির্বাচিত কাউন্সিলরকে বর্জ্য সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ জানাতে হবে বাসিন্দাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন