রাতভর বৃষ্টিতে এয়ারপোর্ট থানা জল থইথই

সারা রাত হু হু করে জল ঢুকেছে। চেয়ার-টেবিল ডুবে গিয়েছে নোংরা জলে। অফিসারেরা জুতো তুলে রাখেন খাটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
Share:

জল-পুলিশ: চেয়ারে উবু হয়ে বসেই কাজ। বৃহস্পতিবার, এয়ারপোর্ট থানায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

থানায় অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা। থানার হাল দেখে অবাক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা না হয় গ্রামের দিকে থাকি। শহরের বুকে থানার এ কী হাল!’’

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে জল ঢুকতে শুরু করে এয়ারপোর্ট থানায়। সারা রাত হু হু করে জল ঢুকেছে। চেয়ার-টেবিল ডুবে গিয়েছে নোংরা জলে। অফিসারেরা জুতো তুলে রাখেন খাটে। থানার গাড়ি, মোটরসাইকেল— জলে ডুবে যায়। বড়বাবুর ঘর, কম্পিউটার রুম, ডিউটি অফিসারদের ঘর, মহিলা ও পুরুষ অফিসারদের ব্যারাক এবং হাজত— জল সর্বত্রই। সূত্রের খবর, থানার হেফাজতে এক বয়স্ক ব্যক্তি ছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি নিখোঁজ হন। এ দিন থানায় জল জমার খবর পেয়ে ওই ব্যক্তির পরিজনেরা থানায় এসে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান।

কলকাতা বিমানবন্দরের চৌহদ্দির মধ্যে দু’টি থানা। একটি নেতাজি সুভাষ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থানা। বিমানবন্দর থানা হিসেবেই পরিচিত সেটি। বিমানবন্দরের ভিতরে কোনও ঘটনা, মামলা বা অপরাধ হলে তার দায় ওই থানার। বিমানবন্দর চৌহদ্দির ভিতরের এলাকাও ওই থানার অধীনে। দ্বিতীয় থানাটি এয়ারপোর্ট থানা হিসেবে পরিচিত। বিমানবন্দরের বাইরে মাইকেলনগর থেকে কৈখালি, বিস্তীর্ণ এলাকা এই থানার অধীনে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, এই থানাটি তুলনামূলক ভাবে নিচু জমিতে তৈরি। ফলে ভারী বৃষ্টিতে বিমানবন্দরের সমস্ত জল এসে জমে থানার কাছেই। কিন্তু এত দিন নিকাশি ব্যবস্থা ভাল থাকায় থানার ভিতরে জল জমেনি। সম্প্রতি ওই এলাকায় মেট্রোর কাজ চলছে। অভিযোগ, তার ফলে সিমেন্ট-বালি পড়ে নিকাশি নালার মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির জল বেরোতে পারেনি। বৃহস্পতিবার সকালে থানা পরিদর্শনে আসেন বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্তারা। দমকলকে ডেকে পাম্প করে জল বার করার কাজ চলে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত। আর প্যান্ট গুটিয়ে চেয়ারে পা তুলে কাজ করেছেন অফিসারেরা। এ দিন বিমানবন্দরের টার্মিনালেও ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ার অভিযোগ উঠেছে।

মেট্রো রেল জানিয়েছে, নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর যাওয়ার মেট্রো লাইনের কাজ হচ্ছে সেখানে। বুধবারেই তাদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওই এলাকা পরিদর্শন করে, কাজের জন্য কোনও নিকাশি যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, তার নির্দেশ দিয়ে এসেছেন। তবে তাঁদের কাজের জন্য যে নিকাশি বন্ধ হয়ে এমন ঘটেছে, সে কথা মানতে চাননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন