পোস্তার ভগ্নস্তূপে আগাছা, মাঝেরহাট যাবে কোথায়?

দু’বছর আগে পোস্তা উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরপরই যে বিষয়টি প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়েছিল, তা হল ওই বিশাল ধ্বংসাবশেষ কোথায় সরানো হবে

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৮
Share:

সমস্যা: এন্টালিতে রয়েছে পোস্তা উড়ালপুলের ভেঙে পড়া অংশ এবং কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি। সেগুলির উপরে গজিয়েছে আগাছা। নিজস্ব চিত্র

একটি উড়ালপুলের ধ্বংসাবশেষের এখনও গতি হয়নি! তার বছর দু’য়েকের মধ্যেই ভেঙে পড়ল আরও একটি সেতু। এ বার এই ধ্বংসাবশেষের কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে। শুধু তা-ই নয়, প্রশাসনের অন্দরে এমন আলোচনাও শোনা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর উড়ালপুল ও সেতু ভাঙবে, আর তার ধ্বংসাবশেষ কোথায় এবং কী ভাবে সরানো হবে, এ বার সে সবের আলাদা পরিকল্পনা করতে হবে কি না!

Advertisement

দু’বছর আগে পোস্তা উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরপরই যে বিষয়টি প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়েছিল, তা হল ওই বিশাল ধ্বংসাবশেষ কোথায় সরানো হবে। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ধ্বংসাবশেষের একাংশ সরানো হবে এন্টালিতে কলকাতা পুরসভার ‌সেন্ট্রাল স্টোর্সের অফিসের ফাঁকা জমিতে। ওখানে একটি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রও রয়েছে। ওই দুই অফিসের পিছনে অনেকটা জায়গা পড়ে রয়েছে। উড়ালপুল ভাঙার সময়ে তার নীচে যা কিছু ছিল, সেগুলিও ওখানে সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

সেই মতো পুরসভার লরিতে করে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া মালপত্র নিয়ে সেন্ট্রাল স্টোর্সের অফিসের ফাঁকা জমিতে রাখা হয়। সেগুলো এখনও সে ভাবেই পড়ে রয়েছে। তার উপরে জমেছে জঞ্জাল, জন্মেছে আগাছা। ও ভাবে ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকায় আপত্তি জানিয়েছেন পুরকর্তাদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ধ্বংসাবশেষের খাঁজে জল জমে এলাকাটা ক্রমেই মশার আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। এমনিতে ‌সেন্ট্রাল স্টোর্সের জমিতে আরও অনেক বাতিল জিনিসও পড়ে থাকে। এমনকি সেখানে পুরসভারই বাতিল গাড়ি-টায়ার স্তূপ করে রাখা থাকে। দরপত্র ডেকে সে সব বিক্রিও করে দেওয়া হয়।কিন্তু ধ্বংসাবশেষের ক্ষেত্রে তো সেই সুবিধা নেই, জানাচ্ছেন এক কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘কত দিন ধরে পোস্তা উড়ালপুলের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে! সেগুলি সরানোর কথাও বলা হয়েছে। পাশেই একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এ ভাবে যদি জায়গাটা অপরিষ্কার হয়ে থাকে তা হলে তো খুব সমস্যা।’’

Advertisement

আরও খবর: অনেক দিনের ‘ক্লান্তি’ অসহ্য হতেই মাঝেরহাটে এই বিপর্যয়!

পুরকর্তাদের একাংশের মতে, নতুন এই ধ্বংসাবশেষ কোথায় ফেলা হবে, এ নিয়ে এখনও কোনও নির্দেশ তাঁরা পাননি। নির্দেশ পেলে সেই মতো এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে। সরকারের তরফে যদি ধ্বংসাবশেষ তোলার জন্য লরি চাওয়া হয়, তা হলে তা পাঠানো হবে।

আরও খবর: এক বছর অবহেলায় আটকে মাঝেরহাটের ৩ কোটির সংস্কার

তবে পুর প্রশাসনের একাংশের মতে, গত কয়েক বছরের মধ্যে শহরে পরপর উড়ালপুল ও সেতু ভাঙার ঘটনায় এক অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কারণ, এ সব ক্ষেত্রে ধ্বংসাবশেষ কোথায়সরানো হবে, তা নিয়ে তো নতুন সমস্যা তৈরি হল। এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘ঝ়ড়ে গাছ পড়লেই কোথায় তা রাখা হবে, তা নিয়ে সমস্যা হয়। সে কারণে তা ধাপায় পাঠাতে হচ্ছে। আর এখানে তো দেখছি নির্দিষ্ট সময় অন্তর উড়ালপুলও ভেঙে পড়ছে। তার ধ্বংসাবশেষ কোথায় সরানো হবে, এ বার সে নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। এ ভাবে চলতে পারে না কি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন