ডেঙ্গিতে মৃতের এলাকায় কিলবিল করছে লার্ভা

জায়গার নাম তালপুকুর। ব্যারাকপুর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড। সোমবার সকালে সেখানকার যে পরিত্যক্ত নিকাশি নালায় মশার লার্ভার এমন বাড়বাড়ন্ত দেখা গেল, তার অনতিদূরেই বাড়ি ষাটোর্ধ্ব দীপককুমার দাসের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৮
Share:

অস্বাস্থ্যকর: আগাছায় ঘেরা জলাশয়। ব্যারাকপুরের তালপুকুরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

নিকাশি নালার উপরে জম‌াট বাঁধা জঞ্জাল। তার উপরে একটি বিজ্ঞাপনের ফ্লেক্স। জঞ্জালের উপরে জমে আছে পরিষ্কার জল। সেখানেই কিলবিল করছে মশার লার্ভা।

Advertisement

জায়গার নাম তালপুকুর। ব্যারাকপুর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড। সোমবার সকালে সেখানকার যে পরিত্যক্ত নিকাশি নালায় মশার লার্ভার এমন বাড়বাড়ন্ত দেখা গেল, তার অনতিদূরেই বাড়ি ষাটোর্ধ্ব দীপককুমার দাসের। ১০ দিন জ্বরে ভোগার পরে রবিবার দুপুরে মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত দীপকবাবুর।

শুধু নিকাশি নালাই নয়, ওই পাড়ার বেশ কয়েকটি বাড়ির পিছনের ফাঁকা জমি এখন আগাছার জঙ্গলে ভরা। সেখানে পুরনো টায়ার থেকে শুরু করে হাজারো অব্যবহৃত জিনিসপত্র পড়ে আছে। তাতেও জমে রয়েছে জল। মশাদের প্রতিপত্তি সেখানেও। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, পুরসভা বারবার সাবধান করার পরেও জঞ্জালের ছবিটা বদলানো যায়নি। অনেকেই ওই সমস্ত ফাঁকা জমিতে ফেলে যান বাড়ির জঞ্জাল। আর অব্যবহৃত জিনিসপত্রে জল জমে বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে মশার। যার ফলে এলাকায় বাড়ছে আতঙ্ক। কিন্তু নিকাশি নালা আর পানাপুকুর পরিষ্কার হচ্ছে না কেন?

Advertisement

ব্যারাকপুরের পুরপ্রধান উত্তম দাস অবশ্য সে কথা মানছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে পুরসভার অভিযান চলছে। প্রতিটি এলাকাই নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। মশার লার্ভা মারার তেলও ছড়ানো হয়। দেওয়া হয় মশা তাড়ানোর ধোঁয়াও।’’ তিনিও পরোক্ষে নাগরিকদের সচেতনতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন।

উত্তমবাবু বলেন, ‘‘মানুষ যদি সচেতন না হয়, তা হলে পুরসভার পক্ষে একা সব কাজ করা মুশকিল। বাড়ির মধ্যে জল জমে থাকছে। অনেকেই বাড়ির মধ্যে জঞ্জালও জমিয়ে রাখছেন। তার ফলে মশার উৎপাত বাড়ছে।’’ তাঁর দাবি, এলাকায় জ্বরের প্রকোপ আগের থেকে অনেক কমেছে। অনেকের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেলেও মৃত্যুর কোনও তথ্য পুরসভার কাছে নেই। দীপকবাবুর ঘটনার বিষয়ে তিনি খোঁজখবর নেবেন বলে জানালেন।

দীপকবাবুর বাড়ির পাশে মজে যাওয়া নিকাশি নালা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে আরও একটি নিকাশি নালা। ওই নালা দিয়ে এলাকার নিকাশি জল যাওয়ার কথা। দেখা গেল, সেটিতেও থমকে রয়েছে জল। প্লাস্টিক আর জঞ্জালে বাধা পড়ছে জলের গতি। জল জমে বাড়ছে মশার উৎপাত।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, পুরসভার কর্মীরা নিয়মিত মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ান। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজও নেন, কারও জ্বর হয়েছে কি না। কিন্তু টায়ারের জমা জল, আবর্জনা বা আগাছা সাফ করার কাজ কখনওই করা হয় না। তার ফলেই মশার উপদ্রব দিনদিন বাড়ছে। এমনকি, শীত শুরু হলেও মশার দাপটে লাগাম পড়েনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন