থলেতে বোতল ভরে পথেই মদের কারবার বাগুইআটিতে

কী লাগবে দাদা? কোন ব্র্যান্ড? যে ব্র্যান্ড চাইবেন, সেটাই পাবেন। হাঁকছেন বাজারের ব্যাগ নিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন যুবক। কেউ কেউ আবার এ কথা বলতে বলতে পথচারীদের গায়ের উপরে হুমড়ি খেয়েও পড়ছেন। উপরের দৃশ্যটা রাতের ভি আই পি রোডে বাগুইআটি বাসস্ট্যান্ডের। বিক্রেতার বাজারের ব্যাগের ফাঁক দিয়ে অবশ্য উঁকি মারছে সার সার মদের বোতল। বাগুইআটি বাস স্ট্যান্ডে রাত দশটা নাগাদ নামলে প্রায়শই এই দৃশ্য চোখে পড়বে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৮
Share:

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

কী লাগবে দাদা? কোন ব্র্যান্ড? যে ব্র্যান্ড চাইবেন, সেটাই পাবেন। হাঁকছেন বাজারের ব্যাগ নিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন যুবক। কেউ কেউ আবার এ কথা বলতে বলতে পথচারীদের গায়ের উপরে হুমড়ি খেয়েও পড়ছেন।

Advertisement

উপরের দৃশ্যটা রাতের ভি আই পি রোডে বাগুইআটি বাসস্ট্যান্ডের। বিক্রেতার বাজারের ব্যাগের ফাঁক দিয়ে অবশ্য উঁকি মারছে সার সার মদের বোতল। বাগুইআটি বাস স্ট্যান্ডে রাত দশটা নাগাদ নামলে প্রায়শই এই দৃশ্য চোখে পড়বে। অভিযোগ, ওই সময়ে এলাকার সব মদের দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে রাস্তাতেই ফের বসে যাচ্ছে মদের দোকান। বিক্রেতারা এতটাই বেপরোয়া যে রাস্তা আটকে পথচারীদের জিজ্ঞাসা করছেন কোন ব্র্যান্ডের মদ চাই। আরও অভিযোগ, রীতিমতো কালোবাজারি শুরু হয়েছে কয়েক জন বিক্রেতার মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মদ বিক্রিকে ঘিরে ভি আই পি রোড এলাকায় ফের মাথাচাড়া দিয়েছে অসামাজিক কাজকর্ম। পাশাপাশি, রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে মহিলারাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ ইতিমধ্যে কয়েক জনকে গ্রেফতার করে কয়েকশো মদের বোতল বাজেয়াপ্ত করেছে। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও রমরমিয়ে চলছে এই কারবার।

স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক জন যুবক সার দিয়ে বাজারের ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। দেখে মনে হবে কেউ যেন বাজার সেরে বাস বা অটো ধরার অপেক্ষা করছেন। ওই বাজারের ব্যাগই আসলে মদের দোকান। কেউ উৎসাহিত হলেই শুরু হচ্ছে দরাদরি। চোখের ইশারায় নির্জন গলিতে গিয়ে বোতল ও টাকা আদানপ্রদান নয়, প্রকাশ্য রাস্তাতেই সওদা হয়ে যাচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু কেনাই নয়, অনেকে রাস্তায় দাঁড়িয়েই দোকান থেকে প্লাস্টিকের কাপ কিনে মদ ঢেলে খেতে শুরু করছেন।

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিধাননগর কমিশনারেটের এসিপি-র অফিসের ঠিক উল্টো দিকে এই ব্যবসা চলছে। পুলিশ মাঝেমধ্যে অভিযান চালালে ব্যবসা বন্ধ থাকে। দু’এক দিনের মধ্যেই ফের চালু হয়ে যায়। অভিযোগ, মাসখানেক আগে অফিসফেরত এক মহিলার গায়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন এক মদ বিক্রেতা। মহিলার অভিযোগ, তিনি প্রতিবাদ করায় ওই যুবক তাঁর দিকে তেড়ে আসেন ও হুমকি দেন। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এক জনকে গ্রেফতারও করে। কিন্তু অভিযোগ, কিছু দিন বন্ধ থাকার পরে ফের শুরু হয়েছে অবাধে মদ বিক্রি।

ভি আই পি রোডে বাগুইআটি এলাকায় এখন উড়ালপুল নির্মাণের কাজ চলছে। তার জন্য ফুটপাথ কেটে রাস্তা চওড়া হচ্ছে। অভিযোগ, ফুটপাথ ভেঙে যাওয়ায় বিক্রেতাদের এখন পোয়াবারো। তাঁরা রীতিমতো রাস্তায় নেমে এসেছেন। এখন আর অন্ধকার গলিতে নয়, বড় রাস্তার ধারেই চলছে এই ব্যবসা। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, ভি আই পি রোডের মতো শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধারে প্রকাশ্যে মদ বিক্রির অভিযোগ বহু দিনের। কিন্তু বাগুইআটি থানা সে ভাবে সক্রিয় নয়। বিধাননগর কমিশনারেটের এসিপি অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “আমরা গত দু’দিনে দু’জনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের থেকে কয়েক বোতল মদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর আগেও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও অভিযান চালানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন