কমিশনারেটে এসেই চুরির সাক্ষী রাজারহাট

বিধাননগর কমিশনারেটের আওতায় আসার প্রথম দিনেই চুরি দিয়ে খাতা খুলল রাজারহাট থানা। মঙ্গলবারই জেলা পুলিশের আওতা থেকে এই কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে থানাটি। আর রাতেই রাজারহাটের কলাবেড়িয়ায় চুরি হয়েছে অমলেশ দত্ত রায় নামে এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মীর বাড়িতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২৫
Share:

বিধাননগর কমিশনারেটের আওতায় আসার প্রথম দিনেই চুরি দিয়ে খাতা খুলল রাজারহাট থানা। মঙ্গলবারই জেলা পুলিশের আওতা থেকে এই কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে থানাটি। আর রাতেই রাজারহাটের কলাবেড়িয়ায় চুরি হয়েছে অমলেশ দত্ত রায় নামে এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মীর বাড়িতে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, এত দিন বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে থাকা জায়গাগুলিতেই চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির নিষ্পত্তি করতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খাচ্ছিল পুলিশ। তাঁদের প্রশ্ন, নতুন এলাকা অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সেখানকার আইনশৃঙ্খলা কতটা রক্ষা করতে পারবে বিধাননগর কমিশনারেট?

Advertisement

বিধাননগরের এডিসিপি সন্তোষ নিম্বলকর জানান, কামদুনি, খড়িবাড়ি, মেটিয়াগাছা, মহিশগাদি ও বিলবাউ চণ্ডী— এই পাঁচটি মৌজাও আনা হয়েছে কমিশনারেটের অধীনে। এগুলি আগে ছিল শাসন থানার অধীনে। এখন সব ক’টিই রাজারহাট থানার অধীনে এল। কিন্তু রাজারহাট, কামদুনি, খড়িবাড়ির মতো বিস্তীর্ণ এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার মতো পরিকাঠামো কি আছে বিধাননগর কমিশনারেটের?

রাজারহাট থানা এলাকার আয়তন ৩৩.২৭ বর্গ কিলোমিটার। কামদুনি, খড়িবাড়ি-সহ পাঁচটি মৌজাও প্রায় ৩০ বর্গ কিলোমিটারের মতো। ওই এলাকাগুলি মূলত গ্রামীণ এলাকা। প্রশ্ন উঠেছে কোন যুক্তিতে জেলা পুলিশ থেকে রাজারহাটকে কমিশনারেটের আওতায় আনা হল?

Advertisement

বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা জানান, রাজারহাট-নিউ টাউন সংলগ্ন এলাকা বলে কমিশনারেটের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল কয়েক মাস আগেই। কামদুনি উত্তর ২৪ পরগনার শাসন থানার অধীনে হলেও রাজারহাট থানা থেকে তার দূরত্ব পনেরো মিনিটের। অথচ শাসন থানা থেকে কামদুনির দূরত্ব প্রায় এক ঘণ্টার। কামদুনি গণধর্ষণ কাণ্ডের পর দেখা যায়, কামদুনি রাজারহাটের মধ্যে থাকলে পুলিশি টহলদারি-সহ নানা ব্যবস্থা দ্রুত করা যেত। খড়িবাড়ি, মেটিয়াগাছাও শাসন থানা থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক। শাসন থেকে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশের এ সব এলাকায় পৌঁছতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। তখনই সিদ্ধান্ত হয়, এই এলাকাগুলিকে রাজারহাট থানার অন্তর্ভুক্ত করলে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যায় পুলিশ অনেক দ্রুত পৌঁছতে পারবে।

কমিশনারেটের কর্তাদের দাবি, রাজারহাট থানা থেকে বারাসতের এসপি-র অফিসের যা দূরত্ব, বিধাননগর কমিশনারেটের সিপি অফিসের দূরত্ব তার চেয়ে কম। ওই কর্তাদের মতে, রাজারহাট, কামদুনি, খড়িবাড়ি, নিউ টাউন এলাকার আশপাশে হওয়ায় ওই এলাকাগুলিতেও নগরায়ণ হচ্ছে। ফলে ওই এলাকাগুলিতে যে ধরনের অপরাধ হচ্ছে, তাতে ক্রমশই ‘আর্বান পোলিসিং’-এর দরকার হয়ে পড়ছে।

পুলিশকর্তাদের মতে, শহর ঘেঁষা এই সব এলাকাকে ভবিষ্যতে কমিশনারেটের আওতায় আনতেই হতো। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “রাজারহাটকে কমিশনারেটের অধীনে আনার পরিকল্পনা অনেক দিনের। তাই পরিকাঠামো কী রকম উন্নত হবে, সে বিষয়ে আগেভাগেই আলোচনা হয়েছে। কমিশনারেট থেকে কিছুটা দূরের জায়গাগুলিতে কী ভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা হবে, তা নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে। রাজারহাট থানায় অতিরিক্ত অফিসার দেওয়া হয়েছে। গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। পরিকাঠামো আরও বাড়ানো হবে।” পুলিশের দাবি, কমিশনারেটে রাজারহাট থানার অন্তর্ভুক্তির প্রথম দিনে এই চুরির ঘটনারও দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন