ঘরেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু বধূর

পুলিশকে মৃতার পরিবার জানিয়েছে, ওই দিন রাত ১১টা নাগাদ পদ্মদেবী তাঁর স্বামী এবং শাশুড়ির সঙ্গে একই ঘরে শুতে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০৩:০৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

মাঝরাতে বিছানায় মাকে দেখতে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়েই আঁতকে উঠেছিলেন বছর আঠেরোর তরুণী। দেখেন, শৌচাগারের সামনে মেঝেতে দাউদাউ করে জ্বলছেন মা। আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। ঘুম ভেঙে যায় বা়ড়ির অন্যদের। ছুটে আসেন পড়শিরাও। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন ওই মহিলাকে। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রাজাবাগান থানা এলাকার লেনিন রোডে। মৃতার নাম পদ্ম সাহা (৪৯)।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, জেড-৩৯ লেনিন রোডের ছোট্ট ঘরে বছর সত্তরের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী পদ্ম এবং মেয়ে বৃথিকাকে নিয়ে থাকেন পেশায় ভ্যানচালক বিজয়কুমার সাহা। সম্প্রতি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ায় বিজয়বাবু আর ভ্যান চালাতে পারতেন না। ফলে আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছিল সংসারে। আর তা নিয়েই চিন্তায় থাকতেন পদ্মদেবী। পুলিশকে পরিবারের লোকজন এবং পড়শিরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছয় যে, পদ্মদেবী অবসাদে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার কী হয়েছিল?

পুলিশকে মৃতার পরিবার জানিয়েছে, ওই দিন রাত ১১টা নাগাদ পদ্মদেবী তাঁর স্বামী এবং শাশুড়ির সঙ্গে একই ঘরে শুতে যান। রাত সওয়া ৩টে নাগাদ মেয়ে বৃথিকার ঘুম ভেঙে গেলে তিনি উঠে পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন, মা বিছানায় নেই। মাকে খুঁজতে ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচাগারের সামনে আসতেই তিনি দেখেন, পদ্মদেবীর গোটা শরীর দাউদাউ করে জ্বলছে। চোখের সামনে মা-কে জ্বলতে দেখে চিৎকার করে ওঠেন মেয়ে। সেই শব্দে ঘুম ভেঙে যায় বিজয়বাবু ও তাঁর বৃদ্ধা মায়ের। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পড়শিরাও। তাঁদের সাহায্যে পদ্মদেবীকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তত ক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে মৃতার পরিবার এবং পড়শিদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ মনে করছে, পদ্মদেবী আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে লালবাজারের গোয়েন্দা দফতরের সায়েন্টিফিক উইংয়ের পাশাপাশি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্যও আবেদন করা হয়েছে। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন