বাড়িতে ফেরানো হল মৃতার দিদিকে

পুলিশের দাবি, রেখাদেবীর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা খুঁজে পায়নি এসএসকেএম হাসপাতাল। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েই সোমবার পুলিশ রেখাদেবীকে ওই আবাসনে ফিরিয়ে দিয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৯
Share:

রবিবার রেখা বসাককে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আনন্দপুরে। নিজস্ব চিত্র

আনন্দপুরের বাসিন্দা রেখা বসাককে বাড়িতে ফিরিয়েই দিয়ে গেল পুলিশ। ই এম বাইপাসের এক সরকারি আবাসনের বাসিন্দা পুতুল বসাকের মৃতদেহ আগলে বসে মুড়ি খাচ্ছেন দিদি রেখা। রবিবার আবাসিকদের একাংশ এই খবর পেয়ে পুলিশকে জানান। বোনের দেহ উদ্ধারের সময়ে দিদিকেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। আবাসিকদের অভিযোগ ছিল, মানসিক ভারসাম্যহীন এই বোনেদের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়ে বহু বার পুলিশে জানানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

Advertisement

তবে পুলিশের দাবি, রেখাদেবীর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা খুঁজে পায়নি এসএসকেএম হাসপাতাল। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েই সোমবার পুলিশ রেখাদেবীকে ওই আবাসনে ফিরিয়ে দিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, হাসপাতাল জানিয়েছে, শুধুমাত্র রক্তচাপ কম ছাড়া তাঁর কোনও অসুস্থতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বোনের ময়না-তদন্ত হওয়ার পরে রেখাই নিজে সই করে তাঁর দেহও নিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।

রবিবার দুপুরে ওই আবাসনের এক বাসিন্দা সীমা তিওয়ারি বসাক ওই দুই বোনকে খাবার দিতে গিয়ে রেখাদেবীর কাছে জানতে পারেন, সকাল থেকে তাঁর বোন পুতুল কথা বলছেন না। সীমাদেবী আবাসিক সমিতিতে জানান। খবর যায় থানায়। পরে দুপুর দু’টো নাগাদ পুলিশ এসে দেখে ঘরের খাটে পুতুলের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। পাশে বসে মুড়ি খাচ্ছেন রেখা। এর পরেই পুলিশ পুতুলের দেহ নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি রেখাকেও এসএসকেএমে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সোমবারই রেখা সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্যে বেশ ক্ষুব্ধ ওই আবাসন সমিতির সদস্যেরা।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসকেরা রেখার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পাননি বলে পুলিশ সব দায় ঝেড়ে ফেলছে। কিন্তু রেখাকে কী অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটা হাসপাতালে জানানো হয়েছিল কি না— প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। রেখা সুস্থ হলে কি বোনের দেহ আগলে পাশে বসে মুড়ি খেতে পারতেন, বক্তব্য তাঁদের। আবাসিকদের আরও দাবি, পুলিশের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে রেখাকে কোনও পুনর্বাসন কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা করানো হয়। পুলিশ তা না করে বাড়ি ফিরিয়ে আনায় বেশ চিন্তিত তাঁরা। এ রকম এক জন মহিলাকে উদ্ধারের পরে পুলিশকে তাঁর স্থায়ী ব্যবস্থার অনুরোধ করলেও এক বার হাসপাতালে দেখিয়েই আবাসনে রেখে দিয়ে গেল। রেখা কি ভাবে একা থাকবেন ওই বাড়িতে, তা নিয়ে চিন্তিত আবাসিকেরা। ‘কার ভরসায় পুলিশ মানসিক ভাবে অসুস্থ এক মহিলাকে বাড়িতে দিয়ে গেল’, প্রশ্ন তাঁর প্রতিবেশীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন