ফের অস্বাভাবিক মৃত্যু বধূর। শুক্রবার, রাজারহাটের চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানাপুকুর গ্রামের ঘটনা। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ওই গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ৩৪ বছরের মৃত বধূ ফতেমা বিবির পরিবারের তরফে তাঁর স্বামী-সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেলে পানাপুকুরে এক গৃহবধূর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার ময়না-তদন্তের জন্য আরজিকর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে দেহ। ফরেনসিক বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
ফতেমার দাদা সইদুল ইসলামের কথায় অবশ্য মৃত্যু নিয়ে রহস্য আরও বেড়েছে। তাঁর দাবি, কিছু দিন আগে ফতেমাকে তাঁর স্বামী জানিয়েছিলেন, তাঁদের কোনও পুত্র সন্তান নেই। তাই তিনি অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করবেন। ফতেমা প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ফতেমা বিবির মা মনোয়ারা বিবি পুলিশকে জানিয়েছেন, পানাপুকুরের মহম্মদ আজগর আলি মোল্লার সঙ্গে ১৭ বছর আগে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। ফতেমার দুই মেয়ে। বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে ফতেমার উপরে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। তাঁরা ধার করে, বাড়ির বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে সেই চাহিদা মিটিয়েছেন। কিন্তু তাতেও সুরাহা হয়নি। মঙ্গলবার ফতেমা বাপের বাড়িতে যান। সেখানে জানান, তাঁর স্বামী ব্যবসার জন্য ৫০ হাজার টাকা চেয়েছেন। টাকা দিতে পারেননি ফতেমার বাবা-মা। পরের দিন শ্বশুরবাড়ি ফিরে যান ফতেমা।
শুক্রবার বিকেলে মনোয়ারা বিবি খবর পান, তাঁর মেয়ে খুব অসুস্থ। অভিযোগ, এর পরে পানাপুকুরে গিয়ে দেখা যায়, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ফতেমা। দেহে প্রাণ নেই। শরীরের কিছু অংশ পোড়া। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির সকলে উধাও। এমনকী ফতেমার দুই মেয়েকেও পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরেই তাঁরা খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ফতেমার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির আট জনের বিরুদ্ধে।
ফতেমার মৃত্যু কী ভাবে হল, সে সময়ে কারা ঘটনাস্থলে ছিলেন, কে বা কারা প্রথম দেখল ফতেমাকে, তাঁর দেহ কী ভাবে উদ্ধার হল— এ সব নিয়ে পুলিশ কিছু বলতে নারাজ। এক পুলিশ কর্তা জানান, তদন্ত চলছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।