মদ্যপানের বিরুদ্ধে ঝাঁটা হাতে পথে মহিলারা

ভাঙড়ের অনিতা মণ্ডল। বাড়ি-বাড়ি কাজ করে সংসার চালাতেন। স্বামীর কাজ ছিল মদ খেয়ে নিত্য অশান্তি করা। এক দিন মদের টাকা না থাকায় ক্লাস সেভেনে পড়া মেয়েকেও বিক্রি করে দিতে যায় সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:৩৪
Share:

ভাঙড়ের অনিতা মণ্ডল। বাড়ি-বাড়ি কাজ করে সংসার চালাতেন। স্বামীর কাজ ছিল মদ খেয়ে নিত্য অশান্তি করা। এক দিন মদের টাকা না থাকায় ক্লাস সেভেনে পড়া মেয়েকেও বিক্রি করে দিতে যায় সে। এখন মেয়েকে নিয়ে একাই থাকেন অনিতা।

Advertisement

স্বামীকে হারিয়ে একা হাতেই পাঁচ ছেলেমেয়েকে বড় করেছিলেন হাফিজা বেগম। কিন্তু একটু বড় হতেই মদ খেতে শুরু করেছে তিন ছেলে। বিক্রি করে দিয়েছে বাড়ি। অবিবাহিত দুই মেয়েকে নিয়ে হাফিজার ঠাঁই এখন এক চিলতে ভাড়ার ঘরে।

হাফিজা, অনিতা ও তাঁদের মতোই অনেক মহিলা পথ হাঁটলেন বুধবারের কলকাতায়। ঝাঁটা বা মদ্যপান-বিরোধী পোস্টার হাতে স্লোগান তুললেন, ‘মদ চাই না দুধ চাই, মদমুক্ত বাংলা চাই’ কিংবা ‘মদ সন্ত্রাস দূর করো, দুধ-মধুতে বাংলা ভরো।’ পার্ক সার্কাস থেকে বৌবাজারের আবগারি দফতর পর্যন্ত সেই মিছিলে পথ হাঁটলেন তাঁরাই, আপনজনের অপরিমিত মদ্যপানের কারণে সমাজে যাঁদের জীবন প্রায় ধ্বংসের মুখে। চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এ রাজ্যে অন্য রকম এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী
রইল মিছিলনগরী।

Advertisement

অনিতারা বলছেন, বারো-তেরো বছর বয়স হতে না হতেই মদ্যপান শুরু করছে গ্রামের ছেলেরা। মদের টাকা জোগাড় করতে না পেরে কেউ কেউ চুরি-ছিনতাই করছে। বাড়ছে গ্রামের মেয়েদের নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করাও। মিছিলের আয়োজক ‘ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়া’র সদস্য সুজাউদ্দিন জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামাঞ্চলে একটা বড় অংশের মানুষের জীবিকা কৃষি, মাছধরা কিংবা দিনমজুরি। আয় খুবই সামান্য। যার বেশির ভাগটাই খরচ হয়ে যাচ্ছে মদের পিছনে। ইদানীং মদের লাইসেন্স পাওয়া সহজ হওয়ায় বেড়ে গিয়েছে মদের দোকানের সংখ্যা। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে লাইসেন্স-বিহীন দোকানও। মদ্যপানের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিই তাঁদের প্রধান উদ্দেশ্য জানিয়ে সুজাউদ্দিন বলেন, ‘‘সরকারকে সবার আগে এটা নিয়ে ভাবতে হবে। মদের দোকানকে ঢালাও লাইসেন্স দেওয়ায় রাশ না টানা হলে যুবসমাজকে এই মারাত্মক নেশা থেকে বাঁচানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন