নাচের প্রোগ্রামের টোপে কিশোরী পাচারের চক্র!

নাচের অনুষ্ঠানে যাবে বলে সাতসকালেই হাজির হয়েছিল পাঁচজন নাবালিকা । তাদেরই পরিচিত পাড়ার এক মাসি কালীঘাট মন্দিরের তোরণের কাছে তাদের দাঁড়াতে বলেছিল। সেখান থেকেই তাদের কুঁদঘাট এবং নিউ আলিপুরে দু’টি জায়গায় নাচের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল মাসি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ১৮:১০
Share:

নাচের অনুষ্ঠানে যাবে বলে সাতসকালেই হাজির হয়েছিল পাঁচজন নাবালিকা । তাদেরই পরিচিত পাড়ার এক মাসি কালীঘাট মন্দিরের তোরণের কাছে তাদের দাঁড়াতে বলেছিল। সেখান থেকেই তাদের কুঁদঘাট এবং নিউ আলিপুরে দু’টি জায়গায় নাচের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল মাসি।

Advertisement

বাড়িতে মেয়েকে না দেখতে পেয়ে এক নাবালিকার অভিভাবকের সন্দেহ হয়। খোঁজখবর নিয়ে জানেন এলকার আরওএ কয়েকটি মেয়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ। এরপরেই তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই মাসি সহ আরও দু’জন মহিলা পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে কালীঘাট থানা এলাকার কালীঘাট রোডে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত তিন মহিলার নাম হেনা মল্লিক, মিনা সিংহ এবং ইলা দলুই। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, এই তিন মহিলা বিহারের সিওয়ান অঞ্চলে নারীপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত।

এ দিন ঠিক কী হয়েছিল?

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, হেনা মল্লিক নামে এক মহিলা কালীঘাট এলাকা। কয়েকদিন আগে হেনাদেবী বিয়ে করে পার্ক সার্কাসে চলে গেলেও এই অঞ্চলে প্রায়ই আসত। অভিযোগ, কয়েকদিন আগে কালীঘাট রোডের কয়েকজন নাবালিকাকে নাচের অনুষ্ঠানে নাচ করলে পয়সা দেবে বলেও হেনাদেবী জানায়। এই নাবালিকাদের বয়স ১২ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। এরা সবাই কালীঘাট রোডের বাসিন্দা। সবাই এলাকার একটি স্কুলে পড়ত। মঙ্গলবার পাঁচজন নাবালিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে হেনাদেবী বুধবার ভোরে কালীঘাট মন্দিরের তোরণের সামনে আসতে বলে। অভিযোগ, মেয়েগুলিকে বাড়িতে এই ব্যাপারে কিছু বলতেও বারণ করে তারা।

ইতিমধ্যেই বাড়ির লোকেরা খবর পায়, এলাকার পাঁচজন নাবালিকাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরেই অভিভাবকেরা পুলিশকে খরব দেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, হেনাদেবীর সঙ্গে এই পাঁচজন মেয়ে হাজরার দিকে গিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ হাজরার বাস স্টপ থেকে পাঁচজন নাবালিকাকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকেই হেনাদেবীর আরও দুই সঙ্গিনী মিনা সিংহ এবং ইলা দলুইকে গ্রেফতার করে।

লক্ষ্মী রুইদাস নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ আমার মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সকাল ছাড়ে ছ’টা নাগাদ মেয়েকে দেখতে না পেয়ে ভয় পেয়ে যাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি ওদের স্কুলের আরও কয়েকজন মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। তখনই সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে খবর দিই।’’

পুলিশের ধারণা, হেনাদেবীর সঙ্গে সিওয়ানের মীনা সিংহ এবং ইলা দলুইয়ের সম্পর্ক ছিল। এ দিন এরা তিনজনেই এই নাবালিকাদের অপরহণ করে হাজরা থেকে বাস ধরে হাওড়ায় গিয়ে বিহারে পালাচ্ছিল এই তিন অভিযুক্ত। বিহারে গিয়ে নর্তকীদের দলে বিক্রি করত বলেও পুলিশের অনুমান। ধৃত এই তিনজনকেই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন