চিকিৎসায় গাফিলতির একটি মামলায় গত মঙ্গলবার উডল্যান্ডস হাসপাতালকে ৮০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
বছর দুয়েক আগে, ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা বীরেন্দ্রকুমার দত্ত। পরের বছরের ৬ এপ্রিল এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। বীরেন্দ্রবাবুর বাড়ির লোকের অভিযোগ, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও উডল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ কোনও দায় নিতে চাননি। বরং তাঁরা এক রকম জোর করে রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
বীরেন্দ্রবাবুর ছেলে টুটুল দত্তের কথায়, ‘‘ওই বেসরকারি হাসপাতালের গাফিলতির জেরেই আমার বাবা মারা গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের চিকিৎসার রেকর্ডও দিতে চাননি।’’ তাঁরা আরও অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে বীরেন্দ্রবাবু সংক্রমণে আক্রান্ত হন। হাসপাতালের অযত্ন ও অসচেতনতার জেরেই তাঁর ওই সংক্রমণ হয়েছিল।
আরও পড়ুন:টিভিতে কর্তারা, ফোনে পাবলিক
টুটুলবাবু উডল্যান্ডস হাসপাতালের বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর দাবি, এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর বাবা ভর্তি থাকাকালীন উডল্যান্ডসের থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র চাইলে তারা জানিয়ে দেয়, চিকিৎসা বাবদ ১৮ লক্ষ টাকা জমা না দিলে কোনও নথিপত্র পাওয়া যাবে না। টুটুলবাবু জানান, তাঁরা ছ’লক্ষ টাকা জমা দিতে পেরেছিলেন। তাতে ওই হাসপাতাল জানিয়েছিল, পুরো টাকা না দেওয়া হলে চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও তথ্য মিলবে না।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় জেনে খুশি টুটুলবাবু। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘যাদের গাফিলতির জেরে বাবাকে হারালাম, তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিতে ভাল লাগছে। আশা করছি এতে ওদের শিক্ষা হবে।’’ টুটুলবাবুর আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করেছিলেন চিকিৎসক কুণাল সাহা। তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষতিপূরণ দেওয়া জরুরি। কারণ যারা অন্যায় করল, তাদের এই আর্থিক দণ্ড পাওয়া দরকার।’’ উডল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, এই মামলার রায় সম্পর্কে তাঁরা কিছুই জানেন না। তাঁদের কাছে রায় সংক্রান্ত কোনও খবর বা নথি এখনও আসেনি।