উদ্যোগ: সেতু তৈরির কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র
এ যেন আসতেও কাটে, যেতেও কাটে। যার ফলে গড়িয়া টালি নালার উপরে প্রণবানন্দ রোড এবং ক্যানাল সাইড রোডের সংযোগকারী সেতুটি নিয়ে ধন্দে পড়েছেন স্থানীয় মানুষ।
নতুন কংক্রিটের সেতুটি হলে এক দিকে যান শাসন ও জন-সংযোগের দিক থেকে উপকৃত হবেন স্থানীয় মানুষ। কিন্তু ইতিমধ্যেই ওই টালি নালায় স্তম্ভ করে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সেতু হয়েছে। ফলে নিকাশির বড় ভরসা গড়িয়া টালি নালা কিছুটা হলেও বিপর্যস্ত। এই সেতু হলে নিকাশি আর কতটা বাধা পাবে, সে নিয়েই ধন্দ।
গড়িয়া মেন রোডের সমান্তরালে তৈরি হওয়া সেতুটি চালু হলে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের পাশের রাস্তা ধরে সরাসরি গড়িয়া স্টেশন রোডে পৌঁছনো যাবে। কলকাতা পুরসভার ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, এর ফলে উৎসবের অত্যধিক ভিড়ে পাটুলি থেকে আসা কিছু গাড়ি গড়িয়া মোড়ের যানজট এড়াতে পারবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, কবি নজরুল মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন ক্যানাল সাইড রোড ও প্রণবানন্দ রোডের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ইস্পাতের তৈরি চার ফুটের একটি সরু লোহার সেতু ছিলই। মেট্রো কর্তৃপক্ষের তৈরি ওই সেতু দিয়ে যানবাহন যেতে পারত না।
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বছর দুয়েক আগে জীর্ণ হয়ে পড়ে সেতুটি। ইস্পাতের পাত খুলে বিপজ্জনক হওয়া সেতুটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় স্থানীয় প্রশাসন। ফলে সমস্যায় পড়েন গড়িয়া বরদাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় এবং হরিমতী বালিকা বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। সূত্রের খবর, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বিকল্প সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে স্থায়ী সেতু তৈরির পরিকল্পনা কার্যকর করা যাচ্ছিল না। নির্বাচন মিটলে নতুন সেতু তৈরি নিয়ে সেচ দফতরের সাহায্য চাওয়া হয়। এর পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে পেরিয়ে গিয়েছিল বেশ কিছুটা সময়। তার উপরে মেট্রোপথের নীচে এই বড় সেতুর স্তম্ভ তৈরিতেও অসুবিধে হচ্ছিল। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা মাটি পরীক্ষা করে পদক্ষেপ করেন।
দরপত্র মেটার পরে মাস পাঁচেক আগেই ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায় ওই সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। ২৪ মিটার লম্বা এবং ৮ মিটার চওড়া সেতু দিয়ে পাশাপাশি দু’টি গাড়ি অনায়াসে যাতায়াত করতে পারবে। অরূপবাবু বলেন, “৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। পুজোর আগেই মানুষের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হবে।”
নতুন এই সেতু নিকাশিকে কতটা ব্যাহত করবে? সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “টালি নালার উপরে আমরা আরও কয়েকটি জায়গায় সেতু করেছি। নিকাশি জলের প্রবাহ যাতে বজায় থাকে সে জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতাও নিতে হয়েছে। এই সেতুটি তুলনায় বড়। ফলে নির্মাণ ও নিকাশি, সব কিছুই নজরে রাখতে হয়েছে।”