Tunnel Boring machine

সঙ্গী ‘চণ্ডী’র অসমাপ্ত দায়িত্ব কাঁধে দৌড় শুরু ‘উর্বী’র

বছর দেড়েক আগে ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ অভিমুখে সুড়ঙ্গ নির্মাণ পর্বে বৌবাজারে আচমকা দুর্ঘটনায় থেমে যায় টিবিএম ‘চণ্ডী’র গতি।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ০২:১৮
Share:

শিয়ালদহ এলাকায় এখানেই ফের শুরু হবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণের ক্ষেত্রে অন্তিম পর্বের দৌড় শুরু করতে প্রস্তুত হচ্ছে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘উর্বী’। শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার অভিমুখে অবশিষ্ট ৮০০ মিটার সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ হবে এই পর্বে। আজ, সোমবার থেকে সেই কাজ শুরু হওয়ার কথা।

Advertisement

বছর দেড়েক আগে ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ অভিমুখে সুড়ঙ্গ নির্মাণ পর্বে বৌবাজারে আচমকা দুর্ঘটনায় থেমে যায় টিবিএম ‘চণ্ডী’র গতি। সুড়ঙ্গে ধস নামায় কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে জলভর্তি সুড়ঙ্গে ‘চণ্ডী’কে ফেলে রেখেই তার মুখ বন্ধ করে দিতে হয়। টানা কয়েক মাস কাজ বন্ধ থাকার পরে পাশে থাকা ‘উর্বী’ সন্তর্পণে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করে। গত অক্টোবরে নিজের লক্ষ্য পূরণ করে সে। এ বার ‘চণ্ডী’র অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করবে ‘উর্বী’। সেই কারণেই তার পশ্চিমমুখী বৌবাজারে পথ চলা শুরু। পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ থেকে ‘উর্বী’কে টেনে বার করে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের মুখে রাখা হয়েছে।

ইস্পাতের ক্যাপসুলের মতো দেখতে ‘উর্বী’র মূল যন্ত্রটির দৈর্ঘ্য ৯ মিটারের কাছাকাছি। গোটা যন্ত্রের দৈর্ঘ্য ৮০ মিটার। সুড়ঙ্গে পূর্ণ

Advertisement

দৈর্ঘ্যের (৮০ মিটার) ওই টিবিএম যন্ত্র স্থাপন করার জন্য শুরুতে ১০০ মিটার সুড়ঙ্গ খননের কাজ খুব সতর্কতার সঙ্গে করা হবে। ওই পর্বকে ‘ইনিশিয়াল ড্রাইভ’ বলছেন মেট্রোর কর্তারা। এই পর্ব আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ‘উর্বী’র সামনে থাকা ইস্পাত এবং টাংস্টেন কার্বাইডের

সংমিশ্রণে তৈরি ব্লেড ঘুরতে ঘুরতে এক দিকে মাটি কাটবে। অন্য দিকে, ‘উর্বী’র পিছনে ইস্পাতের বিশেষ ঠেকনা, দেওয়ালে চাপ দিয়ে এগিয়ে যাবে। অতিকায় ওই যন্ত্র যাতে তার ধাতব ঠেকনায় ভর দিয়ে এগোতে পারে তা নিশ্চিত করতে একদম শুরুতেই ইস্পাতের রিয়্যাকশন বিম তৈরি করা হয়েছে। আপাতত তাতে ভর দিয়েই এগোবে ওই যন্ত্র।

শুরুর এই ১০০ মিটার পথের মধ্যে পড়ছে শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতু। ওই সেতুর স্তম্ভ এবং তার নীচে থাকা ভূগর্ভস্থ নিকাশি পেরোতে হবে টিবিএম-কে। অতি সন্তর্পণে ওই কাজ করার জন্য আগামী ১১ থেকে ১৫ জানুয়ারি ওই সেতু বন্ধ রাখতে কেএমডিএ এবং কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। এ প্রসঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণে যুক্ত এক আধিকারিক বলেন, “শুরুর দিকে দিনে প্রায় দু’মিটার করে সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হবে। এ ভাবেই খুব সতর্কতার সঙ্গে টিবিএম স্থাপনের কাজ সম্পূর্ণ হলে, অর্থাৎ প্রথম ১০০ মিটার খনন হলে তবেই সুড়ঙ্গ নির্মাণে গতি আসবে।”

তবে এ বার শিয়ালদহে ওই সেতুর অংশ পেরিয়ে যাওয়ার পরে বাকি পথ তুলনায় মসৃণ, বলছেন মেট্রোর আধিকারিকেরা। পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের পথ মূলত বৌবাজার স্ট্রিট এবং সংলগ্ন ফুটপাথের মাটির গভীর দিয়ে যাবে। ওই পথে যে সব পুরনো বাড়ি রয়েছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়ার কাজও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।

পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খনন শেষ হলে বৌবাজারের মাটি খুঁড়ে উর্বীকে বার করা হবে। এ দিকে, পুরনো মুখ বন্ধ সুড়ঙ্গে আটকে থাকা টিবিএম ‘চণ্ডী’কে উদ্ধারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন