অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।
ঘটা করে পুলিশ কমিশনারেট হয়েছে। বেড়েছে পরিকাঠামোও।
কিন্তু বাড়েনি কর্মী সংখ্যা। অথচ গত তিন-চার বছরে দুর্ঘটনা বা অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে।
ফলে ডিউটির ‘চাপে’ সাধারণ পুলিশকর্মী থেকে অফিসার সকলেরই এক অবস্থা। কমিশনারেটের অন্দরে গুঞ্জন, এর জেরে পুলিশকর্মীদের উপরে চাপ বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে ক্ষোভও। তাই পুলিশকর্মীদের মানসিক ও শারীরিক ভাবে চাঙ্গা রাখতে এ বার যোগাসনে জোর দিতে চলেছে বিধাননগর কমিশনারেট। চুক্তির ভিত্তিতে দু’জন যোগব্যায়াম প্রশিক্ষককে নিয়োগও করতে চলেছে বিধাননগর পুলিশ প্রশাসন।
তিন বছর পার করেছে বিধাননগর কমিশনারেট। থানার সংখ্যা ১০টি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আলাদা করে সাইবার থানা। সব মিলিয়ে ১১০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিধাননগর কমিশনারেটের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তার মধ্যে সল্টলেক, নিউ টাউনের মতো কার্যত ‘মিনি মহাকরণ’ এলাকা এবং এয়ারপোর্টের মতো সদা ব্যস্ত এলাকাও রয়েছে।
অথচ সিভিক পুলিশ নিয়ে কর্মী সংখ্যা বড়জোর ১৫০০। পুলিশকর্মীদের একাংশের কথায়, এর মধ্যে সল্টলেকে অফিসপাড়া, শপিং মল, স্টেডিয়াম মিলিয়ে প্রতি দিন ভিআইপি ডিউটি লেগেই রয়েছে। অন্য দিকে রয়েছে রাজারহাট, নিউ টাউন, বাগুইআটি, গোলাঘাটা, দক্ষিণদাঁড়ি-সহ একাধিক এলাকায় অপরাধের ঘটনা। পাশাপাশি সল্টলেকে চুরি, ছিনতাই, হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে। গোদের উপর বিষফোঁড়া, তথ্যপ্রযুক্তি এলাকায় প্রতি দিন কার্যত লাফিয়ে বেড়ে চলা সাইবার অপরাধের সংখ্যা। অন্য দিকে ভিআইপি রোড, রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে, সল্টলেকের মতো ব্যস্ত এলাকায় দুর্ঘটনাও ঘটে।
সব মিলিয়ে চাপ ভয়াবহ। এক একজন অফিসার থেকে শুরু করে কর্মীদের রাতভর ডিউটি করার পরে ফের পরের দিন দুপুরেই ডিউটি করতে হয়। পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, যাঁদের কাছে অভিযোগ জানানো হবে, তাঁদেরও ডিউটির একই অবস্থা। সেই নিরিখেই বিধাননগর কমিশনারেট বাড়তি কর্মীর জন্যে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে।
পাশাপাশি তাঁরা মনে করেন, কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ করারও প্রয়োজন। তাই সমস্যার সমাধানে যোগব্যায়ামই শ্রেয় বলে মনে করছেন তাঁরা। চুক্তির ভিত্তিতে দুই পেশাদার প্রশিক্ষককে নিয়োগ করা হবে। তবে পুলিশকর্মীদের কথায়, যোগব্যায়াম নিয়মিত করা বা তার সঙ্গে মানানসই খাবারের প্রয়োজন। ব্যায়ামের সময়ই বা কোথায়? খাবারের আয়োজন করাও তো মুশকিল।
বিধাননগরের এক পুলিশকর্তা জানান, পুলিশকর্মীদের অবস্থার কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত। প্রাথমিক ভাবে যোগব্যায়ামের বিষয়টি চালু করা হবে। তার পরে আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।