অস্ত্রোপচারের পরপরই হৃদ্‌রোগ, কোমায় তরুণী

রবিবার রোগীর ছোট বোন রুমিয়া মজুমদার অভিযোগ করেন, অ্যানাস্থেটিস্টের গাফিলতিতেই তাঁর দিদির এমন অবস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪০
Share:

সোমিয়া মজুমদার

তরুণীর অস্ত্রোপচার শেষে রোগীর পরিজনেদের আশ্বস্ত করেছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু সেই আশ্বাস প্রাপ্তির কিছু ক্ষণের মধ্যে কোমায় চলে যান ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, রানিগঞ্জের বাসিন্দা সোমিয়া মজুমদার। রবিবার রোগীর ছোট বোন রুমিয়া মজুমদার অভিযোগ করেন, অ্যানাস্থেটিস্টের গাফিলতিতেই তাঁর দিদির এমন অবস্থা। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন রুমিয়া।

Advertisement

রানিগঞ্জের বাসিন্দা বছর ঊনচল্লিশের তরুণীর ডিম্বাশয়ে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার ছিল। গত ২৩ ডিসেম্বর টিউমার অস্ত্রোপচারের জন্য সোমিয়াকে ঢাকুরিয়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান বাড়ির লোক। পরদিন বেলা ১১টা নাগাদ অস্ত্রোপচার শুরু হয়। এ দিন তরুণীর মামা সুকুমার রায় বলেন, ‘‘দুপুর দুটো নাগাদ ডাক্তারবাবু বললেন, অস্ত্রোপচার ভাল হয়েছে। ভাগ্নির জ্ঞানও ফিরেছে। এক দিন আইসিইউয়ে রেখে জেনারেল বেডে দিয়ে দেওয়া হবে। সেই রোগীর এই অবস্থা কী করে হল?’’ সোমিয়াকে আইসিইউয়ে যখন নিয়ে যাওয়া হবে, তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন আত্মীয়েরা। কিন্তু প্রায় দেড় ঘণ্টা পরেও তাঁকে আইসিইউয়ে না দেওয়ায় তাঁরা বিচলিত হয়ে পড়েন। এরই মধ্যে অ্যানাস্থেটিস্ট জানান, আইসিইউয়ে নেওয়ার সময়ে সোমিয়া হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মস্তিষ্ক সাড়া না দেওয়ায় রোগীকে ভেন্টিলেটরে দিতে হবে।

তরুণীর জন্য গত বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরে ভাগ্নি যখন অ্যানাস্থেটিস্টের পর্যবেক্ষণে ছিল, সেই সময়ে গাফিলতি হয়েছে। ওঁরা বলছেন, মস্তিষ্কে পাঁচ মিনিট রক্ত যায়নি। আমাদের বক্তব্য, অস্ত্রোপচারের পরে রোগীর মস্তিষ্কে যে রক্ত যাচ্ছে না, তা কি খেয়াল করা হয়নি?’’ একই বক্তব্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগেও জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুকুমারবাবু।

Advertisement

রোগীর পরিজনেদের অভিযোগ প্রসঙ্গে এ দিন ওই হাসপাতালের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করার সময় রোগী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। মস্তিষ্কে কয়েক মিনিটের জন্য রক্ত সরবরাহ না হওয়ায় তিনি কোমায় চলে গিয়েছেন। রক্ত সরবরাহ সচল রাখতে সব রকম চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

একই সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অতিরিক্ত ওজনের জন্য সোমিয়ার বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা ছিল। কমে গিয়েছিল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তরুণীর চিকিৎসায় যাতে কোনও রকম ত্রুটি না হয়, সে জন্য কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। যদিও তরুণীর মামা এ দিন বলেছেন, ‘‘এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ভাগ্নির শারীরিক অবস্থা ভাল নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন