নতুন জীবন পেলেন পা বাদ যাওয়া তরুণী

জ্ঞান ফেরার পরে ওই দৃশ্য দেখে মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়েন রুমা। এর পরে টানা এক মাসের চেষ্টায় শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা চালিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তোলেন বারাসত জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪১
Share:

রুমা খাতুন।

১২ অক্টোবর বিয়ের কথা ছিল মেয়েটির। তার আগে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আইবুড়ো ভাত খেয়ে হবু স্বামী রমজান আলির সঙ্গে গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন বড়গাছিয়া আদর্শ হাই মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রুমা খাতুন। আমডাঙার কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিষে দেয় গাড়িটিকে। স্থানীয় বাসিন্দারাই গাড়ির দরজা ভেঙে রুমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান বারাসত হাসপাতালে। চিকিৎসকদের তৎপরতায় প্রাণে বেঁচে গেলেও বাঁ পা বাদ যায় ওই তরুণীর।

Advertisement

জ্ঞান ফেরার পরে ওই দৃশ্য দেখে মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়েন রুমা। এর পরে টানা এক মাসের চেষ্টায় শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা চালিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তোলেন বারাসত জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। বৃহস্পতিবার ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন ওই তরুণী। তাঁর এই লড়াইয়ে সব সময়ে পাশে ছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন, বিশেষত রমজান। এ দিন রুমাকে নিতে হাসপাতালে এসেছিলেন দুই পরিবারের সদস্যেরাই। রমজানের এক আত্মীয় শাকিলা বিবি জানালেন, রমজানের সঙ্গেই রুমার বিয়ে দেবেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরেই দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনা করে বিয়ের দিন ঠিক করা হবে।’’

বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘মেয়েটির বাঁ পায়ের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, বাদ না দিলে সংক্রমণের আশঙ্কা ছিল। এই পরিস্থিতিতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে মানসিক বিপর্যস্ত তরুণীকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের দেওয়া ক্রাচে ভর করে এখন মেয়েটি একটু আধটু চলাফেরাও করতে পারছে।’’ ভবিষ্যতে রুমার কৃত্রিম পা লাগানো যায় কি না, সেটাও দেখা হবে বলে জানিয়েছেন সুপার।

Advertisement

বাড়ি ফেরার সময়ে এ দিন কাঁদছিলেন রুমা। হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবিকাদের হাত ধরে বিয়েতে থাকার জন্য বারবার অনুরোধ করেছেন তিনি। ওই তরুণীর কথায়, ‘‘দুর্ঘটনার পরে জ্ঞান ছিল না। শুধু ছিল অসহ্য যন্ত্রণা। জ্ঞান ফেরার পরে পা চলে যাওয়া মেনে নিতে পারিনি। কিন্তু ডাক্তারবাবুরা যে ভাবে আমার জীবন আর মনের জোর ফিরিয়ে দিয়েছেন, কোনও দিন ভুলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন