দেহব্যবসায় নামতে না চাওয়ায় তরুণীকে মার, বাঁচাতে এলেন আর এক তরুণী

মঙ্গলবার অভিযোগকারিণী জানান, আক্রান্ত তরুণী তাঁরই মতো পানশালায় নর্তকী হিসেবে কাজ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩০
Share:

অভিযোগ, পানশালার কাজের পাশাপাশি ওই তরুণীকে দেহব্যবসাতেও নামাতে চেয়েছিল অভিযুক্ত।

দেহব্যবসায় নামতে না চাওয়ায় এক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে পেটাচ্ছে এক যুবক। চোখের সামনে এই দৃশ্য দেখে আর এক তরুণী আক্রান্তের

Advertisement

সাহায্যে শুধু এগিয়েই এলেন না, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে বাগুইআটি থানায় অভিযোগও দায়ের করলেন। পুলিশ জানিয়েছে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত রাজকুমার স্বর্ণকারকে নারী পাচার, যৌন হেনস্থা এবং বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে মারধরের ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার অভিযোগকারিণী জানান, আক্রান্ত তরুণী তাঁরই মতো পানশালায় নর্তকী হিসেবে কাজ করেন। রাজকুমারের তত্ত্বাবধানেই ওই তরুণী সেখানে কাজ করতেন। কিন্তু কাজের নাম করে রাজকুমার তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করলে ওই তরুণী তার নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসেন। অভিযোগ, পানশালার কাজের পাশাপাশি ওই তরুণীকে দেহব্যবসাতেও নামাতে চেয়েছিল অভিযুক্ত। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় পাওনা দশ হাজার টাকা নিয়ে রাজকুমার ওই তরুণীকে প্রায়ই ফোনে গালিগালাজ করত।

Advertisement

গত ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজারহাটের একটি আবাসনের সামনে ওই তরুণীকে একা পেয়ে রাজকুমার তাঁকে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। পাশের আবাসনেই থাকেন অভিযোগকারিণী তরুণী। চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়েটিকে রাস্তায় ফেলে রাজকুমার লাথি, ঘুসি মারছিল। এক সময়ে সে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে। ওই দৃশ্য দেখে আবাসনের বাসিন্দাদের সাহায্যে ওকে কোনও মতে উদ্ধার করি।’’

অভিযোগকারিণী জানান, প্রাথমিক ভাবে সেই রাতেই তিনি থানায় ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন। সোমবার রাতে রাজকুমারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারিণী তাদের জানিয়েছেন, তিনি আদতে দিল্লির বাসিন্দা। রাজকুমার তাঁকেও একই ভাবে কাজ দেওয়ার নাম করে অন্ধকার জগতে নামিয়েছিল। তাই বয়সে ছোট এক তরুণীকে মারতে দেখে রাজকুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে বদ্ধপরিকর হন তিনি।

এ দিন অভিযোগকারিণী বলেন, ‘‘রাজকুমার সকলের সঙ্গেই এ রকম করে। এত দিন কিছু বলিনি। কিন্তু চোখের সামনে এক জনকে মৃতপ্রায় করে ফেলতে দেখে থাকতে পারিনি। রাজ ওকে মারতে মারতে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছিল। তুলে আবার মারছিল। মেয়েটির নাক-মুখ ফেটে রক্ত বেরোচ্ছিল। রাজের শাস্তি চাই।’’

ভয় করছে না? অভিযোগকারিণীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘কীসের ভয়? কোনও অন্যায় তো করিনি। এক জনকে মেরে ফেলছে দেখেও প্রতিবাদ করব না!’’

এ দিন আদালতে তোলা হলে ধৃতের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন