সল্টলেকে পড়শিকে ছুরির কোপ, গ্রেফতার যুবক

প্রতিবেশীর হাতে ছুরিবিদ্ধ হলেন এক ছাত্র। বৃহস্পতিবার রাতে, সল্টলেকের করুণাময়ীর ঘটনা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ছাত্রকে সল্টলেকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শান্তনু দাস নামে ওই প্রতিবেশী গ্রেফতার হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:২২
Share:

প্রতিবেশীর হাতে ছুরিবিদ্ধ হলেন এক ছাত্র। বৃহস্পতিবার রাতে, সল্টলেকের করুণাময়ীর ঘটনা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ছাত্রকে সল্টলেকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শান্তনু দাস নামে ওই প্রতিবেশী গ্রেফতার হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, করুণাময়ী আবাসনের সি ব্লকের দু’টি মুখোমুখি ফ্ল্যাটে থাকেন শান্তনু এবং আহত ছাত্র অঙ্কিত কাদ্রুয়ার। অঙ্কিত পাঁচ নম্বর সেক্টরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বৃহস্পতিবার রাতে অঙ্কিত নিজের ফ্ল্যাটে গিয়ে কলিং বেল বাজান। সেখানে আরও তিন ছাত্র পেইং গেস্ট হিসেবে থাকেন। অভিযোগ, তখন পাশের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে করতে ছাদের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন শান্তনু। চিৎকার শুনে বেরিয়ে এসে কোনওমতে শান্তনুকে জড়িয়ে ধরে আটকান তাঁর মা মীরা দাস। পুলিশ জানিয়েছে, রক্তাক্ত অবস্থায় অঙ্কিত দৌড়ে একটি পার্কের কাছে গিয়ে সাহায্য চান। কাছেই বিধাননগর পূর্ব থানার ব্যারাক থেকে কয়েক জন পুলিশকর্মী ও স্থানীয়েরা ছুটে আসেন। অঙ্কিতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বছর উনিশের ওই ছাত্রের শরীরের একাধিক জায়গায় ধারাল ছুরি দিয়ে কোপানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে জামশেদপুরের বাসিন্দা অঙ্কিতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে।

শান্তনুর বাবা জ্যোতি দাস ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টারের প্রাক্তন কর্মী। বছর উনপঞ্চাশের শান্তনুও উচ্চশিক্ষিত। তাঁর বাবা-মায়ের দাবি, ছোটবেলা থেকেই মানসিক রোগে আক্রান্ত শান্তনু। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছে। গত ২০ বছর ধরে তিনি বেকার। স্নাতকোত্তরের পরে বাইরে চাকরি করতে যান। তার পরে শান্তনু বিয়েও করেছিলেন। কিন্তু সেই সম্পর্ক টেকেনি। এর পর থেকেই তাঁর মানসিক সমস্যা বাড়ে। কিছু দিন শিক্ষকতার কাজও করেছিলেন তিনি। পরে সেই চাকরি ছেড়ে ফিরে আসেন।

Advertisement

মীরাদেবী জানান, ওই ঘটনার চিৎকার শুনে বাইরে গিয়ে দেখেন, ছাদের দিকে অঙ্কিতকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন শান্তনু। মীরাদেবীর দাবি, শান্তনু তাঁকে জানিয়েছেন, বাবা-মা এবং তাঁকে কটূক্তি করায় উত্তেজিত হয়ে তিনি এমন কাজ করে ফেলেছেন।

ওই পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, ঘটনার পরেই শান্তনু বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পরে ফোন করে বাড়িতে জানান, পুলিশের কাছে তিনি আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন। পরে পুলিশ জানায়, গ্রেফতার করা হয়েছে শান্তনুকে। জ্যোতিবাবুর দাবি, পাশের ফ্ল্যাটে থাকা চার জন ছেলের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ভাল। তিনি বলেন, ‘‘চারটি ছেলে এক জায়গায় থাকলে শব্দ হবেই। অসুবিধা হলেও কখনও কিছু বলিনি।’’ মীরাদেবী জানান, শান্তনু আগেও জানিয়েছিলেন তাঁকে উত্ত্যক্ত করার বিষয়টি। কিন্তু তিনি আমল দেননি। তাঁর দাবি, ওই ছেলেরা শান্তনুকে উত্ত্যক্ত করতেন বলে তিনি কখনও দেখেননি। কিন্তু তাঁর ছেলে কাউকে কখনও বিরক্ত করেননি।

শুক্রবার ধৃতকে আদালতে তোলা হয়। তাঁর আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা জানান, শান্তনুকে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই রিপোর্ট আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন