হাওড়া ব্রিজের মাথায় যুবক, নীচে গাড়ির জট

পুলিশ জানায়, এ দিন ব্রিজের মাথায় উঠে পড়া ওই যুবকের বাড়ি বিহারের বক্সারে। তাঁকে উদ্ধারের পরে চিকিৎসার জন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। ওই যুবক বিভিন্ন অসংলগ্ন কথা বলছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৪
Share:

হাওড়া ব্রিজের মাথায় উঠে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি (চিহ্নিত)। যার জেরে যানজট সেতুর মুখে। নিজস্ব চিত্র

ফের হাওড়া ব্রিজের মাথায় উঠে হাত নাড়তে দেখা গিয়েছিল এক যুবককে।
সোমবার বিকেলের এই ঘটনায় অবশ্য তেমন কোনও ঝক্কি পোহাতে হয়নি পুলিশ বা দমকল বাহিনীকে। কিছু ক্ষণের চেষ্টায় তাঁকে সেতুর মাথা থেকে নীচে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের দাবি, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন।

Advertisement

কিন্তু যে ব্রিজের ফুটপাতে দাঁড়ানো নিষেধ, এমনকী ছবি তোলাতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা, সেখানে পুলিশের চোখ এড়িয়ে কী ভাবে ব্রিজের মাথায় ওই যুবক উঠে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ব্রিজের হাওড়া ও কলকাতা এই দু’প্রান্তেই রয়েছে পুলিশ বুথ। সেখানে সর্বক্ষণ থাকেন পুলিশকর্মীরা। এ ছাড়াও ব্রিজে কলকাতা পুলিশের টহলদারি গাড়িও থাকে। তার পরেও এমন ঘটল কী ভাবে, প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়েরা। পুলিশকর্তাদের দাবি, কোন দিক থেকে কখন ওই যুবক উঠে পড়েছেন, তা বোঝাই যায়নি। এমন ঘটনা যদিও নতুন নয়। দুই বছরের মধ্যে এ নিয়ে তিন বার হাওড়া ব্রিজের মাথায় কেউ উঠে পড়ার ঘটনা ঘটল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, হাওড়়ার গঙ্গার ঘাটের দিকে ব্রিজের যে তিন নম্বর পিলার রয়েছে, সেখান দিয়েই এ দিন উঠে ছিলেন ওই যুবক।

পুলিশ জানায়, এ দিন ব্রিজের মাথায় উঠে পড়া ওই যুবকের বাড়ি বিহারের বক্সারে। তাঁকে উদ্ধারের পরে চিকিৎসার জন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। ওই যুবক বিভিন্ন অসংলগ্ন কথা বলছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ ব্রিজের উপরের দিকে তাকিয়ে কয়েক জন স্থানীয় যুবককে চেঁচামেচি করতে দেখেন কর্তব্যরত গোলাবাড়ি ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশকর্মীরা। এর পরেই ওই পুলিশকর্মীরা দেখেন, ব্রিজের দু’নম্বর পিলারের মাথায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছেন এক যুবক। কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকার পরে ফের তিনি হাঁটতে শুরু করেন। ওই দৃশ্য দেখে নীচে তখন ভিড় জমতে থাকে। সাময়িক যানজটও হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (ট্র্যাফিক-২) শান্তনু কোঁয়ার। আসে হাওড়ার গোলাবাড়ি এবং কলকাতার উত্তর বন্দর থানার পুলিশ ও দমকল বাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই যুবক কখনও দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছিলেন, কখনও আবার বসে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে ফের উঠে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। ব্রিজের হাওড়ার দিকের শেষ প্রান্তে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে ঘেরা জায়গা রয়েছে, সেখানকার তালা ভেঙে দমকল ও পুলিশ ঢোকে বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ। এর পরে দমকলকর্মীরাও ব্রিজের এক দিকে উঠে ওই যুবককে নীচে নামার জন্য ডাকতে শুরু করেন। দমকলের হাওড়া ডিভিশনের স্টেশন অফিসার অমলকৃষ্ণ হালদার বলেন, ‘‘শেষে ৫০ টাকার একটা নোট বার করে ওঁকে দেখাই। তখনই ওই যুবক নামতে শুরু করেন।’’ দমকলকর্মীদের কাছাকাছি পৌঁছে টাকা নেওয়ার জন্য হাত বাড়াতেই ওই যুবককে ধরে ফেলা হয়। অমলবাবু বলেন, ‘‘মিনিট পনেরোর মধ্যে গোটা অপারেশন শেষ হয়।’’

এর পরে পুলিশি ঘেরাটোপে ওই যুবককে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িতে ওঠার সময়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে নিয়ে এসেছিল এখানে। তাই তো উঠলাম।’’ কে বা কারা তাঁকে নিয়ে এসেছিলেন, তা অবশ্য রাত পর্যন্ত জানতে পারেনি পুলিশ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন