প্রতীকী ছবি।
কিছু দিন ধরেই মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছিল যুবকটির। সঙ্গে চাপা একটা অস্বস্তি। গত ছ’মাস ধরে দৃষ্টিশক্তির ছোটখাটো সমস্যায় ভুগছিলেন বছর বাইশের ওই যুবক। এক সকালে ঘরে ঢুকে আলো জ্বালিয়ে ছেলেকে ঘুম থেকে ডাকতে গিয়েছিলেন মা। ওই যুবক তখন মাকে বলেন আলো জ্বালাতে। মা জানান, ঘরে আলো জ্বলছে। তখনই যুবকটি বুঝতে পারেন, তিনি কিছু দেখতে পাচ্ছেন না। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাড়ির লোকজন। যোগাযোগ করা হয় চিকিৎসকের সঙ্গে।
অ্যাপোলো গ্লেনেগল্স হাসপাতালের এক চিকিৎসক যুবককে পরীক্ষা করে দ্রুত মাথার এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দেন। ওই পরীক্ষার রিপোর্টেই জানা যায়, যুবকের পিটুইটারি টিউমার হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পিটুইটারি গ্রন্থির নীচে থাকা অপটিক এবং অন্য স্নায়ুগুলিকেও চেপে দিয়েছে সেই টিউমার। টিউমার থেকে রক্তক্ষরণ হওয়ার ফলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন মানুষটি। নিউরোসার্জন সত্যনারায়ণ সিংহ জানান, দ্রুত অস্ত্রোপচার করে টিউমার বাদ দিতে হবে। সম্প্রতি প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বাদ দেওয়া হয়েছে সেই টিউমার। আপাতত দৃষ্টিশক্তি ফিরেছে ওই যুবকের।
শহরের চিকিৎসকেরা বলছেন, পিটুইটারি টিউমার নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা খুব কম নয়। সব ক্ষেত্রেই যে রক্তক্ষরণ হয় তেমন নয়। তবে রক্তক্ষরণ হলেই দৃষ্টি চলে যায়। এই টিউমারের প্রাথমিক পর্যায়ে সে ভাবে কোনও লক্ষণ সামনে আসে না। পিটুইটারি টিউমার বড় হলে চোখের সমস্যা, মাথার যন্ত্রণা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়। ততক্ষণে বহু ক্ষেত্রেই অনেক দেরি হয়ে যায়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রাথমিক ভাবে এমন সমস্যা হলে রোগী চোখের ডাক্তারের কাছে যান। সেখানেও প্রকৃত সমস্যা সামনে আসে না। ফলে চিকিৎসায় কিছুটা দেরি হলে বিপদেরও আশঙ্কা থাকে। এমনই জানাচ্ছেন নিউরোসার্জন তথা নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিৎসক শঙ্করপ্রসাদ সাহা। তাঁর মতে, ‘‘এ ক্ষেত্রে হঠাৎ এক দিনে দৃষ্টি হারিয়ে যেতে পারে না। প্রথমে চোখের দু’পাশের দৃষ্টি চলে যায়। ধীরে ধীরে পুরো দৃষ্টি নষ্ট হয়।’’