ভোজেরহাটে যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার

বিভিন্ন জনের থেকে চুল সংগ্রহ করে আনতেন সানি। তিনি কাজ করতেন শেখ কবীর নামে এক মহাজনের অধীনে। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর পায় স্থানীয় থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

অকুস্থলে: মৃত সানি শেখের বাড়ির সামনে তদন্তে পুলিশ। শুক্রবার, ভোজেরহাটের করলবেড়িয়ায়। নিজস্ব চিত্র

কপালে কাটা দাগ, মাথার পিছনে দু’জায়গায় আঘাতের চিহ্ন। শুক্রবার সকালে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার ভোজেরহাটের করলবেড়িয়ার একটি বাড়ি থেকে এ ভাবেই উদ্ধার হল এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ। মৃতের নাম সানি শেখ (৩০)। বাড়ি মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন জনের থেকে চুল সংগ্রহ করে আনতেন সানি। তিনি কাজ করতেন শেখ কবীর নামে এক মহাজনের অধীনে। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর পায় স্থানীয় থানার পুলিশ। খবর পৌঁছয় লালবাজারের হোমিসাইড শাখা এবং ফরেন্সিক বিভাগেও। ঘটনাস্থলে আসেন ডিসি (পূর্ব) নীলকান্ত সুধীর।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ভোঁতা কোনও জিনিস দিয়ে আঘাত করে সানিকে খুন করা হয়েছে। ওই যুবক যে মহাজনের অধীনে কাজ করতেন, সেই কবীর পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে সানির মোবাইল ও মানিব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে না। কী কারণে ওই যুবককে খুন হতে হল, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও তদন্তকারীদের ধারণা, কোনও মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই এই ঘটনা।

Advertisement

সানির খুন হওয়ার খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে আসেন তাঁর এক আত্মীয়। তিনি কাজের সূত্রে কলকাতায় থাকেন। ওই আত্মীয় পুলিশকে জানিয়েছেন, সানিরা তিন ভাই ও দুই বোন। বাড়িতে তাঁর মা-বাবা রয়েছেন। তিন বার বিয়ে করেছিলেন ওই যুবক। কিন্তু কোনও বিয়েই টেকেনি।

পুলিশ জানিয়েছে, ভোজেরহাটের করলবেড়িয়ার বাড়িতে অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে থাকতেন সানি। শবে বরাত উপলক্ষে অনেক কর্মচারী বাড়ি চলে গেলেও তিন জন যাননি। তাঁদের মধ্যে সানিও ছিলেন। এমনিতে তিনি খুব একটা বাড়ি যেতেন না। একা থাকতেই পছন্দ করতেন। কবীর তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর থেকে খুব মদ্যপান করতেন সানি। সে কারণে এক সময়ে অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে থাকলেও পরে তিনি সানিকে অন্য ঘরে একা থাকার ব্যবস্থা করে দেন। কবীর এ দিন বলেন, ‘‘মদ খেয়ে সানি কোনও রকম গোলমাল করত না। তবে অত্যধিক মদ্যপান করত বলে ওর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করেছিলাম।’’

কবীর আরও জানিয়েছেন, এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি এসে দেখেন, সানির ঘরে তালা দেওয়া নেই। কাজে যাননি বুঝে তিনি সানির নাম ধরে ডাকেন। কিন্তু সাড়া না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিয়ে দেখেন, সেটি ভেজানো। আর বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন ওই যুবক। কবীর বলেন, ‘‘সানির পা ধরে নাড়িয়ে ডেকেও সাড়া পাইনি। তার পরেই চাদর সরিয়ে কপালে কাটা দাগ দেখতে পাই।’’

কিন্তু কেন এক জন চুলের ফেরিওয়ালাকে খুন হতে হল? পড়শি, অন্য কর্মচারী এবং সানির আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের ধারণা, কোনও মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েনের কারণেই এই ঘটনা। তবে তারা জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন