দুর্ঘটনায় মৃত্যু যুবকের, রণক্ষেত্র ব্যারাকপুর 

উত্তেজিত জনতা কয়েকটি বাস এবং এলাকার বেশ কিছু দোকানে ভাঙচুর চালায়। গোলমাল গুরুতর আকার নিলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায়। নামে র‌্যাফও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১৯
Share:

ধুন্ধুমার: বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনার পরে ভাঙচুর হওয়া বাস। (ডান দিকে) অজয় যাদব। নিজস্ব চিত্র

বাসের ধাক্কায় এক তরুণের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ব্যারাকপুর। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ রেল স্টেশন লাগোয়া ঘোষপাড়া রোডে একটি বেসরকারি বাস এক তরুণকে ধাক্কা মারে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরেই উত্তেজিত জনতা কয়েকটি বাস এবং এলাকার বেশ কিছু দোকানে ভাঙচুর চালায়। গোলমাল গুরুতর আকার নিলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায়। নামে র‌্যাফও।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় মৃতের নাম অজয় যাদব (২৩)। বাড়ি ব্যারাকপুরের ঘোষপাড়া রোডে। স্থানীয়েরা জানান, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ খাবার কিনতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ১১টা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময়ে স্টেশন লাগোয়া সিনেমা হলের সামনে একটি বেসরকারি বাস অজয়কে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই তাঁর বাড়ি। ঘটনাটি জানাজানি হতেই ছুটে আসেন তাঁর পাড়ার লোকেরা। অজয়কে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার পরেই পথ অবরোধ করে শুরু হয় বিক্ষোভ। ভাঙচুর করা হয়

দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, অতি ব্যস্ত এই রাস্তায় বাসগুলি বেপরোয়া গতিতে যাতায়াত করে। বারবার প্রতিবাদ-অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, এই বিষয়ে পুলিশের কোনও নজরদারি নেই। অবরোধের ফলে রাস্তার দু’দিকেই প্রচুর যানবাহন আটকে পড়ে এ দিন অফিসের ব্যস্ত সময়ে। এরই মধ্যে খবর আসে হাসপাতালে মৃত্যু

হয়েছে অজয়ের। তার পরে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশ জানায়, অবরোধে আটকে পড়া একের পর এক বাসে ভাঙচুর শুরু হয়। দু’টি বেসরকারি এবং দু’টি সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে ছোড়া হয় ইট-পাথর। এলাকা কার্যত

রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এরই মধ্যে রাস্তার ধারের দু’টি দোকানেও ভাঙচুর চলে। স্থানীয়েরা জানান, প্রতিরোধের মুখে পড়ে কিছু ক্ষণের জন্য থমকে যায় পুলিশও। এর পরেই ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র‌্যাফ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এর পরে ধীরে ধীরে পিছু হটেন বিক্ষোভকারীরা। তবে রাস্তায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও সময় গড়িয়ে যায়। তত ক্ষণে পেরিয়েছে ঘণ্টা খানেক।

স্থানীয়েরা জানান, অজয় বিজেপি-কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। তাঁর দাদা সঞ্জয় যাদব বিজেপি-র স্থানীয় নেতা। ঘোষপাড়া রোডে পুরনো গাড়ির ব্যবসা রয়েছে তাঁর। ঘটনার পরে

ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ এলাকায় চলে আসেন। হাসপাতালেও যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, কিছু দিন আগে তৃণমূলের লোকেরা সঞ্জয় এবং অজয়কে খুনের হুমকি দিয়েছিল। এ নিয়ে থানায় অভিযোগও হয়েছিল। অর্জুন বলেন, ‘‘আমার ধারণা, এই ঘটনার সঙ্গে ওই হুমকির যোগ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করুক।’’ অর্জুনের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন

ব্যারাকপুরের পুরপ্রধান উত্তম দাস। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-র প্রার্থী এখন সবেতেই তৃণমূল দেখছেন। এই দুর্ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন