দমদমে এখানেই উদ্ধার হয় সুশান্তের (ইনসেটে) দেহ। নিজস্ব চিত্র
রেললাইনের ধার থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হল। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দমদমে। মৃত ব্যক্তির নাম সুশান্ত গুহ (২৮) ওরফে আলগুছি। এক সময়ে খুনের অভিযোগে জেল খেটেছেন সুশান্ত। ফলে তাঁর মৃত্যুর পিছনে ওই ঘটনার কোনও প্রভাব রয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও জিআরপি-র বক্তব্য, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ট্রেনের ধাক্কায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মদের ঠেকে কাজ করতে করতে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ত্রিনাথ কলোনির বাসিন্দা সুশান্ত। বছর পাঁচেক আগে পাড়ার এক যুবককে খুনের অভিযোগ উঠলে তাঁকে পাড়া ছাড়া হতে হয়। সুশান্তের স্ত্রী পূজা গুহ জানান, ওই খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামীর জেল হয়েছিল। এর পরেই বিশরপাড়ায় ঘর ভাড়া করে সপরিবার থাকতেন সুশান্ত। দমদম রোডে মাছের ব্যবসা করতেন তিনি। পূজা জানান, কালীপুজো উপলক্ষে তারকনাথ কলোনির বাপের বাড়িতে এসেছিলেন তাঁরা। গভীর রাতে সুশান্ত বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সাড়ে তিনটে নাগাদ সুশান্তের খোঁজে একদল যুবক বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। পূজার দাবি, ‘‘রাত আড়াইটের সময়ে কাউকে মারধর করে বাড়িতে এসেছিল। গলার চেন বাড়িতে খুলে রেখে আমাকে ঘুমোতে বলে আবার বেরিয়ে গেল। ওই মারধরের ঘটনার জেরেই সম্ভবত একদল যুবক লাঠি হাতে বাড়িতে চড়াও হয়। যাওয়ার সময়ে বলে যায়, ‘চল দমদম রোডে সুশান্তকে পেয়ে যাব’।’’
এ দিন সকালে তারকনাথ কলোনির বাড়ির কাছেই রেললাইনের ধার থেকে চিৎ হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় সুশান্তের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের মামা রাজা পাল জানান, ভোরে এক প্রতিবেশীর মুখে লাইনের ধারে সুশান্তের দেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তিনি। রাজার কথায়, ‘‘মাথা পুরো থেঁতলে গিয়েছিল। চোখের আঘাত দেখে মনে হল, কিছু দিয়ে মারা হয়েছে। পরনের টি-শার্টটির কলার শুধু গলায় রয়েছে, বাকি অংশ উধাও। বুকে ও হাতের একাধিক জায়গায় আঘাতের জেরে ফোলা। দেখেই মনে হচ্ছে, কেউ মারধর করেছে।’’ পূজা বলেন, ‘‘মনে হয়, আমার স্বামীকে কেউ মেরে রেললাইনের ধারে ফেলে দিয়েছে। কারণ ভাল কাজ তো করত না।’’
ঘটনাস্থল জিআরপি থানার অন্তর্গত হওয়ায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে রেলপুলিশ। জিআরপি সূত্রে খবর, রেলের মেমো অনুযায়ী, ভোর সাড়ে পাঁচটায় আপ বনগাঁ লোকালের চালক ট্রেনে এক জনের ধাক্কা লাগার কথা জানান। মৃতের মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত রয়েছে। তবে সেই আঘাত কী ভাবে এবং শরীরে অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কি না, সে সব জানতে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেতে হবে। মৃত্যুর পিছনে অন্য সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।