যাঁর অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু, তাঁর বক্তব্য নথিভুক্ত না করেই পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। হুমকি দিয়ে মারধর করে জিনিস ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলায় বিমানবন্দর থানার তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। ওই তদন্ত অন্য কোনও দক্ষ পুলিশ অফিসারকে দিয়ে করাতে হবে বলে গত ২৩ নভেম্বর বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন বিচারপতি দত্ত।
গত বছর ১১ মার্চ বিমানবন্দর থানা এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় পাল ওই থানায় অভিযোগ জানিয়ে বলেন, তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেয় কয়েকজন। তাঁকে মারধর করে জোর করে বাড়ির কিছু দামি জিনিস লুঠও করে তারা। সূত্রের খবর, এফআইআর দায়েরের ২০ দিনের মাথায় (৩১ মার্চ ২০১৪) তদন্তকারী অফিসার নিম্ন আদালতে তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমাও দিয়ে দেন। তবে তা নিয়ম মতো জানানো হয়নি অভিযোগকারী সঞ্জয়বাবুকে। এ দিকে, তদন্ত বিষয়ে জানতে না পেরে সঞ্জয়বাবু চলতি বছরের মাঝামাঝি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও জানান তিনি।
এর পরে বিচারপতি দত্তের আদালতে গত ২৩ নভেম্বর মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে সরকারি আইনজীবী অমিতাভ মিত্র জানান, পুলিশ ওই অভিযোগের পুনরায় তদন্ত চেয়ে গত ২১ নভেম্বর নিম্ন আদালতে আবেদন জানিয়েছে। বিচারপতি দত্ত বিস্ময় প্রকাশ করে সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘পুলিশ তা হলে গত ১৭ নভেম্বর আদালতে একটি রিপোর্ট জমা দিয়ে কী ভাবে বলল গত বছরের ৩১ মার্চ তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে নিম্ন আদালতে?’’ বিচারপতি দত্তের প্রশ্ন, ‘‘অভিযোগকারীর বক্তব্য নথিভুক্ত না করে কী করে তদন্তকারী অফিসার মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট নিম্ন আদালতে জমা দিলেন?’’
বিমানবন্দর থানার পুলিশকে দিয়ে মামলার তদন্ত না করানোর নির্দেশে বিচারপতি দত্ত জানান, পুলিশ অভিযোগ পেয়ে সঠিক তদন্ত না করে তড়িঘড়ি একটি রিপোর্ট নিম্ন আদালতে জমা দিয়েছে। অভিযোগকারী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন জেনে বিমানবন্দর থানা নিম্ন আদালতে পুনরায় তদন্তের আবেদন করেছে। তাই তিনি অন্য কোনও দক্ষ অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করাতে নির্দেশ দিচ্ছেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকে।