প্রেমকান্ত সিংহ
পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছিল আলমবাজারের বাসিন্দা প্রেমকান্ত সিংহকে। আর তাতেই বছর বাইশের ওই যুবকের বুক ফুঁড়ে ঢুকে যায় বুলেট। কিন্তু খুনের কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় তদন্তকারীরা। পুলিশের অনুমান, কোনও মহিলাকে কেন্দ্র করে ওই যুবকের সঙ্গে কারও শত্রুতা তৈরি হয়েছিল। আর তার জেরেই বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে।
তবে ঘটনার পরে এক দিন কেটে গেলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আর অপরাধী ধরা না পরার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে প্রায় এক ঘণ্টা আলমবাজার মোড় অবরোধ করে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ওই যুবকের প্রতিবেশীরা। পরে পুলিশ অপরাধীকে গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিলে এবং বরাহনগর পুরসভার তৃণমূল ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ পালের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে যায়।
পুলিশ জানায়, আলমবাজার ফেরি ঘাটের কাছে কালীকৃষ্ণ ঠাকুর রোডে বাবা, মা ও দুই দাদার সঙ্গে থাকতেন প্রেমকান্ত। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ফল্স সিলিং তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। এক বছর আগে কাঁকুড়গাছিতে একটি সংস্থায় কর্মী হিসেবে যোগ দেন। রোজ সকাল ১০টায় কাজে গিয়ে রাত ৯টার মধ্যে ফিরতেন তিনি। বৃহস্পতিবারও সেই মতো কাজে গেলেও রাতে ফেরেননি তিনি। এ দিন অবরোধে এসে ওই যুবকের দিদি আলমবাজারেরই বাসিন্দা পিঙ্কিদেবী বলেন, “রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ফোনে ভাই বলল, একটু পরেই তোমার বাড়ি যাচ্ছি।” সাড়ে ৯টা নাগাদ প্রেমকান্তের বাড়ির লোকজন খবর পান বরাহনগরের তাঁতিপাড়ার বারুইপাড়া লেনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই যুবক। পুলিশ তাঁকে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ জেনেছে, ওই যুবক প্রতি রাতে আলমবাজারে বাস থেকে নেমে হেঁটে বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু ওই দিন কেন তিনি আগের স্টপেজ তাঁতিপাড়ায় নেমে বারুইপাড়ার গলিতে যান, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আবার যে দূরত্ব থেকে গুলি করা হয়েছে তা দেখে পুলিশের মত, এ কাঁচা হাতের কাজ।
এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জনবহুল বারুইপাড়া লেনের একটি চারতলা আবাসনের নীচে টেলিফোন বুথের সিঁড়িতে লেগে রক্তের দাগ। দোকানটি এ দিন বন্ধ ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটলেও এলাকাবাসীর দাবি, কেউ কিছু দেখেননি বা শোনেননি। এমনকী ওই টেলিফোন বুথের কর্মীও পুলিশকে জানান, ওই যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে এসে সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়তে দেখেই ভয়ে দোকান বন্ধ করে চলে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ওই রাতে বারুইপাড়ার ওই গলিতে এক মহিলার সঙ্গে প্রেমকান্ত কথা বলছিলেন বলেও একটি সূত্র পেয়েছে পুলিশ। কিন্তু কে সেই মহিলা কিংবা ক’জন দুষ্কৃতী মিলে এই খুন করেছে, তা স্পষ্ট নয়। ঘটনার পরেই প্রেমকান্তের এক বান্ধবীর কথা জেনে ওই রাতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। শুক্রবারও দফায় দফায় তাঁকে জেরা করেন তদন্তকারীরা।