ক্রিকেট টিম আর ক্যাঙ্গারু ছাপিয়ে যে একটা গোটা অস্ট্রেলিয়া আছে, তার খেয়াল আছে কি? কলকাতাবাসীকে বাকি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এ বার কোমর বেঁধেছে শেফ-মহল। সে মহাদেশের রকমারি রান্না নিয়ে শহরে শুরু হয়েছে খাদ্য উৎসব।
কথায় বলে, যে কোনও জায়গার খাবারের ধরনে ইঙ্গিত মেলে সেখানকার ভূগোল থেকে সমাজ-সংস্কৃতি, সবের সম্পর্কে। আর তাই খাবারের মাধ্যমে অনেকটাই চিনে নেওয়া যায় সেখানকার মানুষজনকে। অস্ট্রেলিয়ার খাবারও যে তার ব্যতিক্রম নয়, তা বুঝিয়ে দেবে এই খাদ্য উৎসবের মেনুও। কম পরিচিত এই মহাদেশটার সঙ্গে কিছু ক্ষণের আলাপ জমাতে এক বার ঘুরে আসা যায় হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালের ‘মিথ’ থেকে।
অস্ট্রেলিয়ায় সমাজে যেমন রয়েছে সেখানকার আদি বাসিন্দা এবং ইউরোপীয় অভিবাসীদের মিশেল, খাবার থেকেও বাদ যায়নি সেই ফিউশনেরই ছোঁয়া। এক দিকে যেমন রয়েছে পশ্চিমী মেজাজের রোস্ট বা বেক করা খাবার, পাশাপাশি আবার মেডিটেরানিয়ান মেজাজের র্যাপ এবং রোলও
রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ঝুলিতে। উৎসবের মেনু বলে দেবে সেখানকার মানুষের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয় স্মোকড্ আর গ্রিলড্ খাবারও। সাম্প্রতিককালে অস্ট্রেলিয়া যেমন দরজা খুলে দিয়েছে নানা দেশ-সংস্কৃতির মানুষের জন্য, সেখানকার ব্যঞ্জনেও দেখা গিয়েছে সংস্কৃতির
সেই বৈচিত্র ও বিস্তার।
আক্ষরিক অর্থেই অস্ট্রেলিয়ার রান্না এখন ‘গ্লোবাল’।‘মিথ’-এর খাদ্য উৎসবে সেই গ্লোবাল পঞ্চব্যঞ্জনের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া যায় এমু পাখির মাংস দিয়ে তৈরি স্ট্যু অথবা ইতালিয় মেজাজের রিসোতোর সঙ্গে পর্ক চপ। থাকছে সি ফুডের বৈচিত্রও। তার মধ্যে থেকে চেখে দেখা যায় মস্ত একটা কাঁকড়া দিয়ে তৈরি ক্র্যাব কেক, সঙ্গে হর্স র্যাডিশ মেয়ো। আরও একটু ঘরোয়া সি ফুড, চিংড়ি-তেও রয়েছে অন্য রকম স্বাদ। পারমা হ্যামে মোড়া চিংড়ি ভাজা, বাঙালি জিভে এনে দেবে পরিচিতকে নতুন করে চেনার আনন্দ।
বাড়ন্ত তাপমাত্রায় ভাজাভুজি এড়িয়ে চলতে বলেছেন কি ডাক্তার? তার জন্যও ব্যবস্থা রয়েছে উৎসবে। রকমারি স্যুপ আর স্যালাডেই তো সেরে ফেলা যায় ভোজ। সুইট পোট্যাটো স্যুপ উইথ ফ্রেশ কোরিয়েন্ডার, পামকিন অ্যান্ড কারি স্যুপ উইথ কোকোনাট ক্রিম গরমের দিনে স্বাদ বদলের জন্য বেশ আরামদায়ক। সঙ্গে নিয়ে নেওয়া যায় বিটরুট চাটনি স্যালাড উইথ ক্র্যানবেরিস, রকেট অ্যান্ড আইসবার্গ স্যালাড উইথ সেলেরি অ্যান্ড ম্যাঙ্গো ড্রেসিং অথবা চিলি স্পাইসড চিকেন উইথ কর্ন অ্যান্ড রোস্টেড বেল পেপার স্যালাড।
হাল্কা মেনকোর্সের পরে শেষপাতটা জমজমাট না হলে কি আর মন ভরে? ঠান্ডা জমকালো কোনও ডেজার্ট চাই অবশ্যই। মিষ্টিমুখ করা যায় চকোলেট নুডলস উইথ ক্যারামেল আইসক্রিম অ্যান্ড ফাজ সস্ দিয়ে। ওয়্যাফেল প্যানকেক সহযোগে পামকিন আইসক্রিম অথবা কফি কেক দিয়ে লেমন দইও গরমের দুপুরে ভাল করে দেয় মনটা। কম পরিচিত সেই মহাদেশের সঙ্গে একটা মিষ্টি পরিচয় সূত্র তৈরি করতে চেখে দেখা যায় আরও একটু অন্য রকমের ডেজার্ট, পিকান টার্ট দিয়ে বেলপেপার আইসক্রিম। উৎসব চলবে ৮ জুন পর্যন্ত। যে কোনও দুপুর অথবা সন্ধ্যায় পৌঁছে গেলেই হল।