কলকাতার কড়চা

...

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৪ ০০:০০
Share:

নায়কের কলমে

Advertisement

নিজেকে বার বার ঘষেমেজে তৈরি করেছেন তিনি। সমন্বয়ী শিল্প যে অভিনয়, তার পথে অনেক দূর যাবেন বলেই গান শিখেছেন নিদানবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে, এমনকী বক্সিংও। নিজেই লিখেছেন এক আত্মজীবনীতে, ‘শুধু গলা সাধাই নয়, তখন নিয়ম করে শরীরচর্চাও শুরু করে দিয়েছি। কারণ আমি তখনই বুঝেছিলাম, সিনেমায়় ঢুুকতে গেলে এ ধরনের ‘ল্যাকপ্যাকে’ চেহারা চলবে না। রীতিমত ডন বৈঠক, এমন কি বক্সিংও শুরু করলাম। তখনকার সময় আমাকে বক্সিং শিখিয়েছিলেন শ্রীভবানী দাস। আজ অবশ্য তাঁর নাম, ববি ডায়াস, বক্সার হিসাবে নয়, ইংরেজী নাচ জানেন বলে তিনি আজ বিখ্যাত। আমার আগামী ছবির জন্য (সপ্তপদী) তাঁরই কাছ থেকে বল ড্যান্স শিক্ষা করছি।’

নানা সময়ে নানা বিষয়ে নানা পত্রিকায় লিখেছেন উত্তমকুমার। অগ্রজ অভিনেতা সম্পর্কে, সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে বার্লিন সফর সম্পর্কে, এমনকী আধুনিক কবিতা সম্পর্কেও। শারদীয় ‘গঙ্গোত্রী’ পত্রিকায় ১৯৭৪-এ লিখছেন, ‘কঠিন শব্দপ্রয়োগ বা ছন্দে আধুনিক কবিতা ঠিক পাঠকের মনের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধন করতে পারছে না।... তবে মূল কথা হল-- এসব সত্ত্বেও যদি তা পরিপূর্ণ কবিতা হয়ে ওঠে, তা হলে সব কিছু ছাড়িয়ে কবিতার লাইন মনের মধ্যে গুঞ্জরিত হবেই, যেমন বিষ্ণু দে-র এই লাইন ‘অন্য অন্ধকার আছে,! তাও চেনা, থেকেছি নিবিড়। ঘন নীল অন্ধকারে, স্পন্দমান ছন্দে অতল স্মৃতির হর্ষ ভয়ে। কাব্যের আদিম গর্ভে যেখানে করেছে মহা ভীড়।’ এমনই সব দুষ্প্রাপ্য লেখা সংকলিত করে এ বার সপ্তর্ষি প্রকাশ করছে নায়কের কলমে। সংকলন ও সম্পাদনায় অভীক চট্টোপাধ্যায়। থাকছে সুকুমার রায়ের তোলা দুর্লভ ছবিও, সঙ্গে তারই দুটি। সেপ্টেম্বরে উত্তমকুমারের জন্মদিনে বইটি প্রকাশিত হবে। এ দিকে প্রতি বারের মতো নন্দনে শিল্পী সংসদ আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবটি এ বছর সুচিত্রা সেনের প্রয়াণের জন্য ‘উত্তম-সুচিত্রা চলচ্চিত্র উৎসব’ নামে চিহ্নিত হয়েছে। ২৪-৩০ জুলাই এ উৎসবে শুধু উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত ১৪টি ছবি দেখানো হচ্ছে।

Advertisement

দুর্লভ ভাষণ

পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রাজ্যপাল, ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল। বিশিষ্ট কংগ্রেসি নেতা, মহাত্মা গাঁধী আর জওহরলাল নেহরু দুজনেরই ঘনিষ্ঠ। পরে প্রতিষ্ঠা করেন স্বতন্ত্রতা পার্টি। সাহিত্যসৃষ্টিতে তাঁর ভূমিকা কম ছিল না।

রাজাজি, চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী (১৮৭৮-১৯৭২) প্রথম ভারতরত্ন, পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি সম্মানও। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে ১৯৪৭-’৪৮-এ তাঁর দেওয়া ৮৪টি দুর্লভ ভাষণ সংকলন-সম্পাদনা করেছেন শ্যামল বিশ্বাস (প্রকাশক: পাণ্ডুলিপি)। ২৭ জুলাই বিকেল ৫টায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। সঙ্গের ছবি: কলকাতার রাজভবনে জাতীয় পতাকা তুলছেন রাজ্যপাল রাজাগোপালাচারী (১৫ অগস্ট ’৪৭)।

উন্নয়নের বিষ

মানুষের জীবন-জীবিকার যুদ্ধ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উন্নতির প্রশ্ন ভিন্ন হতে পারে না এই ছিল তাঁর বিশ্বাস। প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর একটির কারণ উন্নয়নের বিষ। তাই নিয়েই আজীবন লড়াই করেছেন সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স-এর পদার্থবিজ্ঞানী অভী দত্ত মজুমদার। তৈরি করেছিলেন ‘একচেটিয়া আগ্রাসন বিরোধী মঞ্চ’ (ফামা)-র মতো সংস্থা। গত ডিসেম্বরে দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে তিনি চলে গেছেন। ২৬ জুলাই বিকেল চারটেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলে অনুষ্ঠিত হবে অভী দত্ত মজুমদার স্মারক বক্তৃতা। বিষয় ‘উন্নয়নের স্বৈরাচার ও বিষাক্ত উন্নয়ন’। বলবেন সতীনাথ সারাঙ্গি (সথ্যু), এবং বাংলাদেশের পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী ফরিদা আখতার। প্রধান অতিথি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। আয়োজনে ফামা।

বি পি এল

হাওড়া স্টেশনের আগেই সিগন্যালে আটকে যায় লোকালটি। সকাল সাড়ে ন’টা, অফিস টাইম, ঠাসা ভিড়। অসহিষ্ণু এক যাত্রীর মন্তব্য, ‘বি পি এল তো, তাই আমাদের এই দুর্দশা।’ মানে? প্রশ্ন শুনে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন সহযাত্রীটি একে তো এই লাইনে ট্রেন চালু হতে লেগে গেল চল্লিশ বছরেরও বেশি। কোনও স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম ছোট, ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে যায়। একটা স্টেশনে তো প্ল্যাটফর্ম নেই-ই। তার ওপর প্রায়ই এ রকম সিগন্যালে সময় নষ্ট। সবশেষে আছে পনেরো নম্বর প্ল্যাটফর্মের যন্ত্রণা। এই প্ল্যাটফর্মটি প্রায় সিকি কিলোমিটার দূরে, ট্রেন ধরতে ছোটাছুটির একশেষ। কোনও শেড নেই রোদ, বৃষ্টি ফ্রি, অসুস্থ শিশু কি বয়স্ক যাত্রীরা পড়েন চরম দুর্দশায়। এই লাইনের ট্রেনকে তাই নিত্যযাত্রীরা দুঃখ করে বলেন বিপিএল রেল। এমন সব কথার মাঝেই ট্রেন এসে দাঁড়ায় পনেরো নম্বর প্ল্যাটফর্মে। ট্রেন থেকে নেমেই ছুট লাগান দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-আমতা শাখার যুবক যাত্রীটি।

প্রতিষ্ঠা দিবস

সূচনা পর্বে আলোর দিশারী হয়ে উঠেছিল অনেকেই, কিন্তু শতবর্ষ পেরিয়ে সক্রিয় থাকার নজির বাঙালি বিদ্বৎ-প্রতিষ্ঠানের খুব বেশি নেই। নানা ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ ১২১ বছর সম্পূর্ণ করে আজও যে শুধু সক্রিয় তা-ই নয়, তার কাজকর্মের পরিধি বেড়েই চলেছে। প্রকাশনায় নানা নতুন পরিকল্পনা, গ্রন্থাগার-পরিষেবায় পেশাদারিত্ব ও আধুনিকতার ছোঁয়া, দুর্লভ বই-পত্রিকা-পুথি-নথিসংগ্রহ ডিজিটাইজ করার উদ্যোগ, সংগ্রহশালার উন্নয়ন, ইত্যাদি নানাবিধ কাজে কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা এখন ব্যস্ত। তারই মধ্যে ২৫ জুলাই পরিষৎ-সভাঘরে পালিত হবে ১২২তম প্রতিষ্ঠাদিবস। প্রবীণ ঐতিহাসিক বিনয়ভূষণ চৌধুরী প্রতিষ্ঠাদিবসের ভাষণ দেবেন, বিশিষ্ট গবেষক-লেখকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নানা পুরস্কার। এই সঙ্গে পরিষৎ-প্রকাশিত বইপত্রের প্রদর্শনী ও বিশেষ ছাড়ে বিক্রির ব্যবস্থাও থাকছে।

আবৃত্তি পরম্পরা

সত্তর দশক। পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতার লড়াই চলছে। রাত সওয়া ১০টায় রেডিয়োতে দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সংবাদ পরিক্রমা’ রক্তে দোলা লাগাত। তারও আগে কাজি সব্যসাচীর কণ্ঠে ‘বিদ্রোহী’ রেকর্ড প্রকাশের পর এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটল। জানা গেল অভিনেতা ছাড়াও আবৃত্তি হয়। আর তারও আগে ১২৫৭ বঙ্গাব্দে ঈশ্বর গুপ্ত সংবাদ প্রভাকরের দফতরে প্রথম কবি সম্মেলন আয়োজন করেন। রামায়ণ-মহাভারতের যুগ থেকে আজ অবধি আবৃত্তির নানা ইতিহাস ও পরম্পরাকে ২৬-২৯ জুলাই কামারহাটি নজরুল মঞ্চ ও সমাজ সদনে প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরছে আবৃ্ত্তির দল শঙ্খমেলা। উপলক্ষ তাদের ২৫তম জন্মদিন। থাকবে আবৃত্তি উৎসব।

যাপিত জীবন

নেপালের জীবন-ধর্ম-দর্শন নিয়ে গবেষণা করতে প্রায় এক মাস সেখানে ছিলেন সুকুমারী ভট্টাচার্য। ৩৬ বছর আগের তাঁর সেই নেপালের ডায়েরি বেরিয়েছিল ‘বারণরেখা’ পত্রিকায়। বছর তিনেক আগে তাঁরই উদ্যোগে অরূপ বসুর সম্পাদনায় এই পত্রিকাটির প্রকাশ শুরু হয়। প্রয়াত হওয়ার আগে গত বাংলা নববর্ষের দিন পত্রিকাটির শেষ প্রকাশিত সংখ্যাটি নিজের হাতে প্রকাশ করেন। সুকুমারী দেবীর নিজের আঁকা ছবি ও লেখা ছিল তাতে। ২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতী সভাগৃহে ‘বারণরেখা’ সুকুমারী দেবীর যাপিত জীবনকে তুলে ধরবে নানা আলোচনা। তাঁর পড়াশোনা, গবেষণা, লেখালেখি প্রভৃতি বিষয়ে বলবেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, হোসেনুর রহমান, যশোধরা বাগচী প্রমুখ।

লোককথা

অর্জুনের ঔরসে নাগকন্যা উলুপীর গর্ভে জন্মেছিলেন আরাভান। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পাণ্ডবদের জয় নিশ্চিত করতে কালীর কাছে বলিপ্রদত্ত হন তিনি। মৃত্যুর আগে আরাভান এক রাতের জন্য বিবাহ করতে চাইলে কৃষ্ণ মোহিনী রূপ ধরে সে ইচ্ছে পূরণ করেন। মহাভারতের ইরাবানের গল্প নয়, দক্ষিণ ভারতীয় লোককথায় এ ভাবেই আরাভানকে নিয়ে নানা কাহিনি। এই উপাখ্যানকেই ২৮ জুলাই বেজিং ডান্স ফেস্টিভ্যালে কত্থক ও সমসাময়িক নাচের মাধ্যমে তুলে ধরবে রিদমোজেক সেনগুপ্ত ডান্স কোম্পানি। চিনের তিনটি শহর মিলিয়ে হওয়া এই আন্তর্জাতিক নাচের উৎসবে এই প্রথম কোনও ভারতীয় দল যাচ্ছে। উৎসব হবে বেজিং শহরে। মিতুল সেনগুপ্তের নির্দেশনা, শিল্পী রণিশাম্বিক ঘোষ, শিবায়ন গঙ্গোপাধ্যায় ও প্রসন্ন শইকিয়া। নাচের পাশাপাশি শিবায়নের অন্য একটি পরিচয় আছে। তিনি ক্যারাটেতে থার্ড ডান ব্ল্যাকবেল্ট (কেওকুশিন)।

সেই গান

রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর গান শৈলজারঞ্জন মজুমদারের জীবনের শেষ প্রত্যয় ছিল। কবির অনুষঙ্গে নানা স্মৃতি তাঁকে আচ্ছন্ন করে রাখত। ১৯৩৯-এ বর্ষামঙ্গল উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের ষোলোটি গান রচনা ও সেই ক’টি দিনের অভিজ্ঞতা শৈলজারঞ্জনের স্মৃতির মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছিল। প্রতি বর্ষায় সেই স্মৃতি রোমন্থন ও ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে ওই ষোলোটি গান পরিবেশন করিয়ে রবীন্দ্রতর্পণ করতেন তিনি। শৈলজারঞ্জনের ১১৫ তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে একটি স্মৃতিনির্ভর কথিকার সঙ্গে সেই ষোলোটি গানের অর্ঘ্য সাজিয়েছে ‘সুনন্দন’। এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় অনুষ্ঠানটি আজ সন্ধে সাড়ে ছ’টায়, আইসিসিআর-এ ।

ভাস্কর-স্মরণ

টবের মাটিতে আজও দুই পা ডুবিয়ে, হাত ছাড়িয়ে দাঁড়ালে/ শরীরে কি ফুল হবে?’ - এমন পংক্তি অনায়াসে লিখে যেতেন কবি ভাস্কর চক্রবর্তী। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে তিনি লিখছেন ‘মৃত্যুর কোনো সময়জ্ঞান নেই। এলেই হলো!’ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০০৫-এ ষাট বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি। কিন্তু রয়ে গেছেন তাঁর সৃষ্টির মধ্যে। ২৩ জুলাই জীবনানন্দ সভাঘরে ভাস্কর চক্রবর্তী স্মারক বক্তৃতা দেবেন রণজিৎ দাশ। অনির্বাণ মুখোপাধ্যায় ও অনুরূপ ভৌমিক লেখকের কবিতা ও গদ্যপাঠ করবেন, রয়েছে অন্য কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠ এবং শ্রুতি চক্রবর্তীর গান। আয়োজনে একালের রক্তকরবী ও ঊর্বী প্রকাশন।

প্রশ্ন

আমার প্রতিটি নাটকেই যেমন নতুন ভাষার সন্ধান করি, তেমন এ নাটকেও করেছি। নিজের নতুন নাটক নিয়ে বলছিলেন সুমন মুখোপাধ্যায়। ম্যাক্স ফ্রিশ-এর ‘দ্য ফায়ার রেইজার’ কয়েক দশক আগেই অনুবাদ করেছিলেন নবারুণ ভট্টাচার্য ‘যারা আগুন লাগায়’। সুমনের সিনেমা ‘হারবার্ট’ আর ‘কাঙাল মালসাট’-এর মতো এ বার থিয়েটারেও নবারুণের রচনা। আর ম্যাক্স আদতে সুইস নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই তিনি জার্মান ভাষার বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সে ভাবেই চেনে তাঁকে দুনিয়ার পাঠক। ব্যক্তিমানুষের অস্তিত্বের সংকট থেকে শুরু করে তার নৈতিকতা বা রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা, সবই তাঁর সাহিত্যের বিষয়, ‘তাঁর এই সমকালীন ধ্রুপদী নাটককেই ব্ল্যাক হিউমার-এ বেঁধেছি, সেরিব্রাল সংলাপ, খেয়াল করলেই দর্শক অন্তর্ঘাতগুলো টের পাবেন।’ সুমন জানাচ্ছিলেন তাঁর এ-নাটক করার কারণ, ‘যে সময়টার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি সেটাকে উন্মোচন করতে চাইছি। সময়টার মধ্যে জড়িয়ে যাচ্ছি আমরা সবাই, চারপাশে যা ঘটছে তার জন্যে আমরা নিজেরাও কি দায়ী নই? নিজেদের কবর নিজেরাই কি খুঁড়ছি না আমরা? চারপাশের গোলমেলে ঘটনাগুলো সম্পর্কে কতটুকু সচেতন বা সতর্ক থাকি আমরা? এই প্রশ্নগুলিই তুলতে চেয়েছি আমার নাটকে।’ তৃতীয় সূত্র-এর প্রযোজনায় এ-নাটকের প্রথম অভিনয় হয়ে গিয়েছে গত ১৩ জুলাই, আসন্ন ১ অগস্ট দুপুর ৩টেয় অ্যাকাডেমি’তে পরবর্তী অভিনয়। সঙ্গীত দেবজ্যোতি মিশ্রর, আর হিরণ মিত্রর মঞ্চ।

শতবর্ষে

রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্তের (১৯১৫-২০০৯) জন্মদিন ১১ জুলাই, শতবর্ষে পা দিলেন তিনি। ‘স্টেটসম্যান’ আর ‘অসম ট্রিবিউন’-এ লেখা তাঁর একগুচ্ছ চিঠি নিয়ে গাঙচিল থেকে বেরচ্ছে লেটার্স টু দি এডিটর। মার্ক্স আর তাঁর মার্ক্সবাদ, রাসেল, চিনা সভ্যতা, রবীন্দ্রনাথ আর জার্মানি, সিরাজের পতন, মহাত্মা গাঁধী, শ্যামাপ্রসাদ, মাও-এর মলিন ইমেজ, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ... শুরুতেই এই বিষয়-বৈচিত্র নিয়ে আলোচনা করেছেন সৌরীন ভট্টাচার্য। চিঠি তো নয়, ছোট ছোট নিবন্ধই বলা চলে। চিঠিগুলি তিনি লিখতেন যাতে সমাজের নানা বিষয় সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে ওঠেন পাঠক। ‘দিজ আর নট পার্সোনাল লেটার্স’, খেয়াল করিয়ে দিয়েছেন সৌরীনবাবু। এই মনস্বীর জ্ঞান চর্চায় ছিল প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের ভাব সমন্বয়। পিতৃভূমি বরিশাল। প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ স্কলার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এম এ, বাংলায় ডি ফিল, অক্সফোর্ড থেকেও ডি ফিল। কলকাতা, যাদবপুর, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা, ’৭৭-এ কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের অধিকর্তা। ইন্টারন্যাশনাল কমপ্যারেটিভ লিটারেচার অ্যাসোসিয়েশন-এর কর্মসমিতির প্রথম ভারতীয় সদস্য। বঙ্গীয় জাতীয় শিক্ষা পরিষৎ-এর ফেলো। ’৮৪-’৮৫ ‘চতুরঙ্গ’ পত্রিকার সম্পাদক। ২০০৬-এ দেশিকোত্তম ছাড়া নানা সম্মান ও পুরস্কার। ইংরেজি ও বাংলায় বহু গ্রন্থের লেখক। ছাত্রছাত্রী, অনুরাগী ও বন্ধুরা মিলে তাঁর জন্মশতবর্ষ পালনের আয়োজন করেছেন আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হল-এ, ২৬ জুলাই সন্ধে ৬টায়। চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সে সন্ধ্যায় স্মারক-বক্তৃতা দেবেন সুকান্ত চৌধুরী: ‘জ্ঞান বিদ্যা তথ্য’। স্বাগত ও সমাপ্তি ভাষণে চিন্ময় গুহ ও অমলকুমার মুখোপাধ্যায়। লেটার্স টু দি এডিটর-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন