জমজমাট মেলা। ছবি: সুমন বল্লভ।
ডিম দিয়ে পুজো বনদুর্গার। সঙ্গে নারায়ণের দ্বাদশ অবতার। পৌষ সংক্রান্তির সময়ে দক্ষিণ শহরতলির বাঘাযতীনের লালকায় প্রতি বছর এই পুজোর আয়োজন হয়। নাম বারোভূতের পুজো। বসে মেলাও।
পুজো এবং মেলার উদ্যোক্তাদের দাবি, ঢাকা শহরের কাছে রোহিতপুর গ্রামে দুগ্ধপণ্য ব্যবসায়ী চৈতন্য ঘোষের হাত ধরে এই পুজো এবং মেলার সূত্রপাত। দেশ ভাগের পরে সেই এলাকার অনেকে চলে আসেন দক্ষিণ শহরতলির বাঘাযতীন, বিজয়গড়, শ্রীকলোনি, গান্ধী কলোনি এলাকায়। তাঁরাই ১৯৫২-এ লালকায় এক বট এবং অশ্বত্থ গাছের নীচে বনদুর্গা এবং দ্বাদশ অবতার প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। বসে মেলাও। পরে গড়ে ওঠে মন্দির।
উদ্যোক্তারা জানান, চৈতন্য ঘোষের বাড়িতে এমনিতেই নারায়ণের দশ অবতারের সঙ্গে নিতাই-গৌর ও বুদ্ধের পুজো হত। এক দিন তাঁর বাড়িতে আসেন এক বৃদ্ধা এবং সঙ্গে দু’টি শিশু। অন্য কিছু না থাকায় হাঁসের ডিম দিয়ে তাঁদের আপ্যায়ন করেন চৈতন্যবাবু। কথিত, সেই রাতেই চৈতন্য ঘোষ স্বপ্নে সেই বৃদ্ধাকে বনদুর্গা রূপে দেখেন। এর পরেই চৈতন্য ঘোষ বনদুর্গার পুজো করবেন বলে স্থির করেন। নারায়ণের দ্বাদশ অবতারের সঙ্গে স্থান পান দেবী বনদুর্গা। বনদুর্গার পুজোর সময়ে ডিম ব্যবহার করা হয়। পরে এই পুজোর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
এখানে পৌষ সংক্রান্তি থেকে শ্রীকলোনি বাজার থেকে লায়েলকা পুকুর পর্যন্ত এই মেলা বসে। মেলা হয় সাত দিন ধরে। উদ্যোক্তাদের দাবি, মেলার মূল আর্কষণ, গঙ্গাসাগর ফেরত সাধুরা। পুজোর ডিম, ফলমূল আশপাশের হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম এবং অনাথ আশ্রমে বিলি করা হয় বলে জানালেন অন্যতম উদ্যোক্তা সুখরঞ্জন ঘোষ। পাশাপাশি আয়োজকরা তৈরি করেছেন বারোভূত সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। এর মাধ্যমে নানা সামাজিক কাজ, দুঃস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।