কেবল টিভির সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ট্রাই) গ্রাহকদের উপকারে বিভিন্ন ‘কঠোর’ নির্দেশ জারি করে ঠিকই। কিন্তু, বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মাল্টি সার্ভিস অপারেটর (এমএসও)-এর কাজে ট্রাইয়ের নির্দেশ অমান্য করারই উদাহরণ পাওয়া যায়।
যেমন, কয়েক মাস ধরে সল্টলেক ও লাগোয়া এলাকার প্রায় আড়াই লক্ষ কেবল টিভি গ্রাহক একটি বিশেষ প্যাকেজের প্রায় ৩০টি চ্যানেল দেখতে পাচ্ছেন না। একটি এমএসও হ্যাথওয়ে ও জি-টার্নার ব্রডকাস্টার সংস্থার দ্বন্দ্বে মার খাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের দিতে হচ্ছে পুরো টাকা। অভিযোগ, এ নিয়ে ট্রাইয়ের কাছে আবেদন জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
সল্টলেকের এ সি ব্লকের এক বাসিন্দা অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বছর দেড়েক আগে স্থানীয় কেবল অপারেটর জানান, মুম্বইয়ের এমএসও হ্যাথওয়ে আসছে। প্যাকেজ ঠিক করে টাকা দিলেও মাস চারেক হল জি বাংলা, জি সিনেমা, বাংলা খবর, ইংরেজি সিনেমা, খবরের চ্যানেল বন্ধ। কিন্তু টাকা দিতে হচ্ছে।” এ বি ব্লকের বাসিন্দা শান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অপারেটররা বলছেন বন্ধ হয়ে যাওয়া চ্যানেলের জন্য বাড়তি টাকা দিতে হবে। সেগুলি আর প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত নয়।”
জি টিভি-র এক আধিকারিক হরিশ দুসেজা জানান, হ্যাথওয়ে সম্প্রতি তাঁদের জানায়, জি-টার্নার গোষ্ঠীর চ্যানেলগুলি তারা সাধারণ প্যাকেজে রাখবে না। বদলে প্রতিটি চ্যানেলের জন্য গ্রাহকদের থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হবে। হরিশের অভিযোগ, হ্যাথওয়ে গ্রাহক সংখ্যার হিসেব দিতেও রাজি নয়, নতুন আর্থিক চুক্তিতেও রাজি হয়নি। তাই তারা সাধারণ প্যাকেজ থেকে জি-টার্নার গোষ্ঠীর চ্যানেল সরিয়ে দিয়েছে। হ্যাথওয়ের এক অংশীদার বিজয় অগ্রবাল অবশ্য বলেন, “জি-টার্নার গোষ্ঠী ইচ্ছেমতো চ্যানেলের দাম স্থির করে আমাদের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি”
এ ছাড়া, ট্রাইয়ের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, কোনও কেবল অপারেটর, এমএসও বা ব্রডকাস্টার গ্রাহকের উপর জোর খাটাতে পারবে না। গ্রাহক চাইলে অন্য এমএসও সংস্থার লাইন নিতে পারেন। কিন্তু অভিযোগ, কেবল অপারেটরেরা একে অন্যের এলাকায় লাইন না ঢোকানোয় একটি এমএসও সংস্থার গোলমালের জন্য তার সম্প্রচারের এলাকার বাসিন্দারা অন্য এমএসও সংস্থার পরিষেবা নিতে পারেন না। ফলে গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতেই হয়।
বিষয়টি নিয়ে ট্রাইয়ের উপদেষ্টা জি এস কেশরওয়ানি বলেন, “সমস্যা সারা ভারতে। দেখছি কী ভাবে মেটানো যায়।”