ভরদুপুরে এক ব্যক্তিকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল কাশীপুর এলাকার দুষ্কৃতী চন্দন সিংহ ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে চিত্পুর থানা এলাকার কাশীপুর রেল ইয়ার্ডের কাছে। স্থানীয়েরা দু’জনকে ধরে ফেলে। গণপ্রহারে আহত হয় তারা। পরে রেলপুলিশ এসে ইছাপুরের বাসিন্দা পিন্টু দাস ও আকাশ কুরমি নামে ওই দুই যুবককে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করে।
রেলপুলিশ জানিয়েছে, এ দিন শেখ ওসমান নামে এক ব্যক্তি ও তার আরও দু’জন সঙ্গী কেসি রায় রোডের ধারে কাশীপুর রেল ইয়ার্ডের কাছে বসেছিলেন। তখন চন্দন এবং তার আরও জনা পাঁচেক শাগরেদ এসে তাঁদের কাছে টাকা চায় বলে অভিযোগ। শেখ ওসমান বলেন, “আমি সিমেন্টের ব্যবসা করি।
চন্দন এসে আমাকে বলল, এখানে ব্যবসা করতে গেলে আমাকে টাকা দিতে হবে।”
এই নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়। বচসা চলাকালীন আচমকাই ওসমানকে লক্ষ করে চন্দন বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। ওসমানের পায়ের সামনে বোমাটি ফেটে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর পরেই দৌড়ে পালাতে শুরু করেন ওসমান। তাঁর পিছনে চন্দন ও তার দলবল দৌড়তে দৌড়তে আরও একটি বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। ছুটতে গিয়ে পড়ে যান ওসমান। তার পরে শুরু হয় হাতাহাতি। চন্দন ও তার সঙ্গীদের সকলের হাতেই বন্দুক ছিল বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ওসমান। ইতিমধ্যে বোমার আওয়াজ পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে চলে আসেন এবং ধাওয়া করে দু’জনকে ধরে মারতে শুরু করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দনের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক বোমাবাজির মামলা রয়েছে। দেড় বছর আগে ওই এলাকাতেই বোমাবাজির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বেশ কয়েক মাস জেল খেটেও এসেছে সে। ছাড়া পেয়েই আবার বোমাবাজি শুরু করায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টিটাগড়, খড়দহের বিভিন্ন সমাজবিরোধীদের সঙ্গে চন্দনের যোগসাজশ রয়েছে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, চন্দনের বাড়ি টিটাগড়ে। সেখানেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি আহত দুই যুবক কেন এ দিন ওই জায়গায় এসেছিলেন তা-ও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
অন্য দিকে, বেশ কয়েকটি গণ্ডগোলের মামলায় ওসমানেরও নাম রয়েছে বলে পুলিশের একাংশের কাছ থেকে জানা গিয়েছে। চন্দনের সঙ্গে ওসমানের বহু পুরনো শত্রুতা। তার জেরেই এই হামলা বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
শিয়ালদহের রেলপুলিশ সুপার উত্পলকুমার নস্কর বলেছেন, “যে দু’জনকে স্থানীয় বাসিন্দারা ধরেছেন, তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যদি তাদের কোনও যোগ থাকে, তবে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”