পড়ে শৌচাগার। —নিজস্ব চিত্র
তৈরির পরে পেরিয়েছে এক দশক। জল না আসায় আজও প্রামাণিক ঘাটের সুসজ্জিত শৌচাগারটি ব্যবহার করা যায়নি। জলাধার, ওভারহেড ট্যাঙ্ক, পাইপলাইন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। অন্য দিকে, একই সময়ে তৈরি রতনবাবু ঘাটের শৌচাগার দু’টিও জলের অভাবে এখনও ব্যবহার শুরু হল না। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই দু’টি ঘাটের শৌচাগারগুলি সম্পর্কে এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
প্রামাণিক ঘাটের শৌচাগার তৈরির সময়েই সিঁড়ি ঘেঁষে তৈরি হয়েছিল মহিলাদের পোশাক বদলের ঘর। অভিযোগ, ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে আলো জ্বলে না। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে রতনবাবু ঘাটে মহিলাদের সংরক্ষিত অংশেও। আবর্জনা আর দুর্গন্ধের পাশাপাশি সেখানে সবসময় ভবঘুরেরা থাকে বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা।
প্রামাণিক ঘাটের স্থানীয় বাসিন্দা অমিত দাস বলেন, “পড়ে থেকে সাজানো শৌচাগার নষ্ট হচ্ছে। জল পৌঁছয়নি। জলাধারে আমরা কয়েক বছর মাছ ছেড়ে চাষ করেছি পর্যন্ত। এখন কী অবস্থা বলতে পারব না।” প্রামাণিক ঘাটের পোশাক বদলের ঘরের উপরেই রয়েছে স্নান করতে আসা মহিলাদের জন্য নিরাপত্তারক্ষীর ঘর। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেটির দখল এখন কিছু দুষ্কৃতীর হাতে। ঘরটিতে মদ, গাঁজার আড্ডা বসে নিয়মিত। একাধিক বার স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানো হয়েছে। এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের সীতা জায়সবাল জানান, পুরসভার নিরাপত্তারক্ষী থাকেন ওখানে। অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ পাইনি। যদিও কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বন্দর ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।”
বিবি বাজারের বাসিন্দা নেহা প্রসাদ জানাচ্ছেন, ঘাট ও জেটিপথের মাঝখানে কয়েক বছর আগে পুরসভার পক্ষ থেকে একটি খোলা শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। দৃষ্টিকটূ ওই শৌচাগারটি ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান (গ্যাপ)-এর পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, অনেক সময়ে ঘাট সংলগ্ন চেঞ্জিং রুম গ্যাপ তৈরি করে ঠিকই। তবে শৌচাগার তৈরি করে না। এ ক্ষেত্রে চেঞ্জিং রুম গ্যাপ করেছিল কিনা দেখতে হবে।
বাসিন্দা সুকুমার খাঁড়া জানাচ্ছেন, কয়েক বছর আগে সাধন পাণ্ডের অর্থানুকুল্যে রতনবাবু ঘাটের দু’টি শৌচাগারের বেশ কিছু জিনিস আবারও নতুন করে বসানো হয়। অথচ জানানো সত্ত্বেও শৌচাগারগুলিতে জল আসেনি। সীতাদেবীর দাবি, “কলকাতা পুরসভাই অনেক বছর আগে তৈরি করেছিল। জলের সংযোগের জন্য পুরসভাকে বলেছি। এখনও কিছু হয়নি।” মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার বলেন, “বিষয়টি জানতাম না। খোঁজ নিয়ে দেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নিচ্ছি। ঘাটের পরিচ্ছন্নতা আর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও স্থানীয় পুর প্রতিনিধিকে সক্রিয় হতে বলব।”