সম্পত্তিকর দিতে হবে রাজারহাট-নিউ টাউনের বাসিন্দাদেরও। আগামী এক বছরের মধ্যে করের কাঠামো তৈরি করে দেবে রাজ্যের মূল্যায়ন পর্ষদ। তার পরেই শুরু হবে কর নেওয়া। নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজ্য সরকার নিউ টাউনে সম্পত্তিকর বসানো নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। রাজ্যের মূল্যায়ন পর্ষদকে লিখিত ভাবে তা জানিয়েও দেওয়া হয়। এক বছরের মধ্যে যাতে কর-কাঠামো তৈরির কাজ শেষ হয়, সেই বিষয়ে অফিসার পর্যায়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তবে কর-কাঠামোটি সল্টলেকের মতো হবে, না কলকাতা পুরসভার মতো, তা এখনও ঠিক করা হয়নি। কলকাতা পুরসভার কর-কাঠামো তৈরি করে কেএমসি। সল্টলেক পুরসভার কর-কাঠামো নিয়ে আদালতে এখনও মামলা ঝুলে রয়েছে। নিউ টাউন-রাজারহাটের ক্ষেত্রে কাঠামো কী হবে, তা সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করবে রাজ্য সরকার।
নিউ টাউন-রাজারহাট সল্টলেকের লাগোয়া। রাজারহাটের আয়তন সল্টলেকের প্রায় আড়াই গুণ। সল্টলেকে সরকারি আবাসন, সমবায় আবাসন, ব্যক্তিগত জমি ও বেশ কিছু সরকারি অফিস রয়েছে। সব মিলে প্রায় ২২ হাজার প্লট। বর্তমানে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ থাকেন সল্টলেকে। তবে এখনও বেশ কিছু প্লট ফাঁকা রয়েছে। সেই জায়গায় নিউ টাউন-রাজারহাটে বহু বেসরকারি সংস্থার অফিস রয়েছে, বেসরকারি ও সমবায় আবাসন, সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আবাসন ছাড়াও বিনোদন পার্ক-সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে। নগরোন্নয়ন দফতরের হিসেব মতো বর্তমানে ৪০ লক্ষ মানুষ বসবাস করছেন নিউ টাউনে। সব কাজ শেষ হলে ওই অঞ্চলে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বসবাস করার কথা।
রাজ্যের নগরোন্নয়ন সচিব দেবাশিস সেন বলেন, “নিউ টাউন-রাজারহাটে কর কাঠামো তৈরির জন্য জন্য রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। রাজ্যের মূল্যায়ন পর্ষদ সম্পত্তির মূল্যায়ন করবে। আগামী এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।”
কিন্তু নিউ টাউন-রাজারহাটে বহুদিন ধরেই মানুষ বসবাস করছেন। তা হলে এত দেরিতে কর কাঠামো তৈরির বিজ্ঞপ্তি জারি হল কেন?
দেবাশিসবাবুর কথায়, “সময় মতোই সব করা হচ্ছে। লোকসভা ভোটের আগে বিধানসভায় বিল পাশ করা হয়। তার পরে আইন তৈরি করা হয়। সেই মতো সম্প্রতি মূল্যায়ন নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।” রাজ্যের মূল্যায়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কর কাঠামো তৈরির জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” তবে রাজ্যের মূল্যায়ন পর্ষদ সূত্রের খবর, কর কাঠামো তৈরির আগে ওই এলাকাকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করা হবে। তার মধ্যে শিল্পের জন্য আলাদা বাণিজ্যিক প্লট, ব্যক্তিগত বাড়ি, খালি প্লট সবই আলাদা আলাদা করে চিহ্নিত করা হবে। জেলার পুরসভাগুলিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে কর কাঠামো তৈরি করা হয়। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই নিউ টাউন-রাজারহাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে, রাজ্য সরকারের পরামর্শ মতো কর কাঠামো তৈরি করা হবে।