রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন দরগা রোডের এক মহিলা। তিন দিন পরে, শনিবার তিনি ফিরে এসেছেন অক্ষত দেহে। কিন্তু রহস্যের জট এখনও খোলেনি। তদন্তে নেমেছে বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ।
মহিলার অভিযোগ, কলকাতা থেকে অপহরণ করার পরে তাঁকে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শেষমেশ দিল্লিতে পৌঁছে তাঁকে এক রকম ছেড়ে দিয়েই পালায় অপহরণকারীরা। মহিলার দাবি, তাঁর দু’টি সোনার আংটি ও কানের দুল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁর চুল কেটে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর কাছে থাকা নগদ সাতশো টাকায় হাত দেয়নি অপহরণকারীরা।
বছর পঁয়তাল্লিশের এই মহিলা বিবাহিত। তাঁর চব্বিশ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। মহিলার বক্তব্য, গত বুধবার ইএম বাইপাস লাগোয়া আনন্দপুরের পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল ন’টা নাগাদ দরগা রোডের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। বাড়ির সামনে থেকেই একটি ট্যাক্সিতে ওঠেন। চালক ছাড়া ট্যাক্সিতে অন্য কেউ ছিল না। সায়েন্স সিটি-র কাছাকাছি ট্যাক্সি পৌঁছনোর পরেই তিনি জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরলে দেখেন, তিনি একটি ট্রেনে বসে রয়েছেন। তাঁর মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা রয়েছে। পাশে বসে আছেন তেমনই মুখঢাকা আর এক মহিলা।
কোথায় যাচ্ছেন, সে কথা জিজ্ঞেস করতেই অন্য মহিলা তাঁকে হুমকি দেন, বেশি কথা বললে তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলা হবে। এর পরেই তিনি ফের জ্ঞান হারান বলে মহিলার দাবি। শুক্রবার তিনি বুঝতে পারেন, তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশের বরাবাঁকি স্টেশনে। ওই স্টেশন থেকে আর একটি ট্রেনে নিয়ে যাওয়া হয় লখনউ। মহিলা দাবি করেছেন, লখনউ থেকে ফের ট্রেনে চেপে তাঁরা কানপুরে পৌঁছন। সেখানে আর এক মহিলা তাঁর পিঠে কিল মারে ও আংটি-কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। শেষমেশ দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু গোটা সময়টাই কি তিনি সংজ্ঞাহীন ছিলেন, নাকি মাঝখানে পালাবার চেষ্টা করেছিলেন, সেটা স্পষ্ট নয়। কারা কেন তাঁকে অপহরণ করেছিল, স্পষ্ট নয় তা-ও।
মহিলা বলছেন, শনিবার সকালে দিল্লি পৌঁছনোর পরে অপহরণকারীদের কাউকে দেখতে পাননি। প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে থানায় বিষয়টি জানান। ছেলের ফোন নম্বরও পুলিশকে দেন। দিল্লি পুলিশ ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। শনিবারই মহিলার ছেলে এবং স্বামী দিল্লি গিয়ে তাঁকে রাতেই বিমানে শহরে ফিরিয়ে আনেন।