পুকুরঘাটে দু’জোড়া চটি, দু’টি গামছা এবং একটি বালতি পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল এলাকার বাসিন্দাদের। আর তার পরই তাঁরা নিজেরাই নেমে পড়েন পুকুরে। উদ্ধার করেন দুই বালকের মৃতদেহ।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বালির নিশ্চিন্দা পশ্চিমপাড়ায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত দুই বালকের নাম সন্দীপ হাতি (১০) এবং রাহুল মজুমদার (১০)। দু’জনেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সন্দীপের বাড়ি নিশ্চিন্দায় হলেও রাহুল থাকে কোন্নগরে। সে কোন্নগর হাইস্কুলের ছাত্র। সন্দীপ পড়ে নিশ্চিন্দা চিত্তরঞ্জন বিদ্যাপীঠে। জানা গিয়েছে, দিদার বাৎসরিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে নিশ্চিন্দায় মামার বাড়িতে এসেছিল রাহুল। তাঁর মামারা সন্দীপদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সেই সূত্রে রাহুলের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল সন্দীপের।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ বাড়ির সকলে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। রাহুলের মা-ও বাড়িতে ছিলেন না। ওই সময়ে সন্দীপের সঙ্গে বাড়ির উল্টো দিকের পুকুরে স্নান করতে যায় রাহুল। তাঁদের বাড়ির লোকজন জানান, দুই বালকের কেউই সাঁতার জানত না। সাধারণত সামনের কলেই স্নান করত। এ দিন হঠাৎ কেন পুকুরে স্নান করতে গেল, বোঝা যাচ্ছে না। তবে এলাকার বাসিন্দাদের ধারণা, পুকুরে নামার পরে ওরা কোনও ভাবে তলিয়ে যায়।
এর প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে সাড়ে ১১টা নাগাদ স্থানীয়েরা স্নান করতে যাওয়ার সময়ে পুকুরঘাটে চটি, গামছা, বালতি পড়ে থাকতে দেখেন। সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা সকলে মিলে পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে দুই বালকের দেহ উদ্ধার করেন। এর পর তাদের উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা সেখানে দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই খবর পশ্চিমপাড়ায় পৌঁছনোর পরই গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ঘটনার পরে রাহুলের মা আরতি মজুমদারের আফশোস, “ওরা যখন স্নান করতে যায়, আমি ছিলাম না। এক জনকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। থাকলে ওদের নামতে দিতাম না। এত বড় ক্ষতি হত না।”