দুই মহিলা কনস্টেবলের শ্লীলতাহানি এবং অন্য পুলিশকর্মীদের নিগ্রহের ঘটনায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত অধরা বাকি অভিযুক্তেরা।
বৃহস্পতিবার ডক্টরস লেনে ওই ঘটনার পরেই সন্দীপ দাস নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল তালতলা থানা। পুলিশের একাংশের অভিযোগ, শ্লীলতাহানি, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া সহ হামলার ঘটনার পিছনে শাসক দলের হাত রয়েছে । পুলিশের ওই অংশের অভিযোগ, ওই ঘটনায় সন্দীপকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে এলে তার প্রতিবাদে ওই দিন সন্ধ্যায় ঘণ্টা দুয়েক তালতলা থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় তৃণমূলকর্মীরা। ওই অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী সাহা বন্দোপাধ্যায়ের দাবি, পুলিশকর্মীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় শাসক দলের কেউ জড়িত নন।
লালবাজার সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে তালতলা থানায় আসে কর্নাটক পুলিশের একটি দল। প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত পম্পা মণ্ডল নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের সাহায্য চায় তারা। তাদের কথামতো অভিযুক্তকে ধরতে কর্নাটক পুলিশের সঙ্গে তালতলা থানার এক সাব ইনস্পেক্টর, ওই দুই মহিলা কনস্টেবল-সহ চার জন পুলিশকর্মীর একটি দল অভিযুক্তের ডক্টরস লেনের বাড়িতে যান।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশির সময়ে আচমকাই সেখানে উপস্থিত হন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। অভিযোগ, পুলিশকর্মীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন তাঁরা। এর প্রতিবাদ করলে ওই যুবকরা মহিলা পুলিশকর্মীদের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। লালবাজার সূত্রের খবর, অবস্থা হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে বিরাট পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে গ্রেফতার করা হয় সন্দীপ দাস নামে অভিযুক্ত এক যুবককে। কিন্তু যাঁকে গ্রেফতার করতে পুলিশের দলটি ডক্টরস লেনে গিয়েছিল, এই ঘটনার জেরে সেই পম্পা মণ্ডলকে আর গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশেরই একাংশের অভিযোগ, এর ফলে ভিন্ রাজ্যের পুলিশের সামনে মাথা হেঁট হয়ে গেল কলকাতার পুলিশের।
এর আগে ১৪ নভেম্বর আলিপুরে একটি সরকারি জমিতে আবাসন তৈরির কাজে বাধা দেওয়া নিয়ে গোলমাল বাধে। স্থানীয় একটি কলোনির বাসিন্দারা আলিপুর থানায় হামলা চালান বলে অভিযোগ। সেখানে শাসক দলের সমর্থকেরা জড়িত থাকায় তাঁদের গ্রেফতার না করে থানার আধিকারিকেরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, এমন অভিযোগ করা হয় পুলিশের নিচুতলা থেকেই। ঘটনার পর থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে শাসক দলকে বাঁচানোর অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের একাংশের বক্তব্য ছিল, শাসক দল এবং রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই অভিযুক্তদের ধরছে না পুলিশ। এই অভিযোগ এবং আদালতে তিরস্কৃত হওয়ার পরেই তদন্তকারী অফিসারকে সরিয়ে ওই থানার অতিরিক্ত ওসি-র হাতে তদন্তভার দেওয়া হয়।