পরিকল্পনা হয়েছে বেশ কয়েক মাস আগেই। কিন্তু এখনও বসল না নজরদারি ক্যামেরা। অথচ নিউ টাউন রোড ক্রমশই কলকাতার অন্যতম প্রবেশপথ হয়ে উঠছে। কলকাতার কাছে পরিকল্পিত এই উপনগরীর রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নজরদারি ক্যামেরা না বসায় নিউ টাউনের রাস্তার নিরাপত্তা নিয়েও যথারীতি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নিউ টাউনের বহুতলগুলোয় জনসংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। বাড়ছে নিত্যনতুন অফিস। বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীরা অনেক রাতে বাড়ি ফেরেন। নজরদারি ক্যামেরা না থাকায় নিউ টাউনের রাস্তায় এর আগে অপহরণ-সহ যে সব অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর সমাধান করতে অন্ধকারে হাতড়াতে হয়েছে পুলিশকে। এ সব বিবেচনা করেই মাস কয়েক আগে বিধাননগর কমিশনারেট নিউ টাউনের মোড়ে বেশ কিছু আধুনিক ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করে। তবে অভিযোগ, পরিকল্পনার স্তরেই কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। বাস্তব অবস্থা যে-কে সেই। যদিও কমিশনারেটের কর্তাদের দাবি, ভোট মিটলেই কাজ শুরু হবে।
কমিশনারেটের কর্তাদের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা ছিল ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার কয়েক মাস আগেই। তা হলে ভোটের আগেই কেন কাজ শুরু হল না? কেন এখনও নিউ টাউন রোড ও নিউ টাউনের অন্যান্য প্রধান রাস্তাগুলো অরক্ষিতই থেকে গিয়েছে? যদিও কমিশনারেট সূত্রে খবর, শুধু নিরাপত্তার জন্যই নয়। নিউ টাউনে এমন কিছু আধুনিক ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেগুলো ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে। কমিশনারেটের দাবি, এ ধরনের অত্যাধুনিক ক্যামেরা কলকাতার রাস্তায় নেই। কমিশনারেটের এক কর্তার কথায়, “এই ক্যামেরা বসলে ট্রাফিক ব্যবস্থার মানও উন্নত হবে।” কর্তাদের দাবি, প্রতিটি মোড়ে সব সময়ে ট্রাফিক পুলিশ না থাকলেও যান নিয়ন্ত্রণের রাশ থাকবে পুলিশের হাতে।
বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানিয়েছেন, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ‘এনফোর্সমেন্ট ক্যামেরা’ নামে এক বিশেষ ধরনের ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কোনও গাড়ি যদি ট্রাফিক আইন ভাঙে, তা হলে শুধু সেই গাড়ির ছবিই উঠবে না, কী ধরনের ট্রাফিক আইন ভাঙা হল, তা-ও জানিয়ে দেবে ওই ক্যামেরা। এ ছাড়াও, ওই ট্রাফিক আইন ভাঙার জন্য ওই গাড়ির কী ধরনের ও কত জরিমানা হওয়া উচিত সেই হিসেবও করে দেবে এই অত্যাধুনিক ক্যামেরা। কমিশনারেটের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “আমাদের কাজ হল শুধু জরিমানার প্রিন্ট বার করে অভিযুক্ত চালকের বাড়ির ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া।” এ ছাড়া, ওই রাস্তায় ছোট এলইডি টিভিও বসানোর কথা। ক্যামেরায় যা ধরা পড়বে, তা ফুটে উঠবে সেই টিভির পর্দায়। সেই সঙ্গে দেখা যাবে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে নানা তথ্য। সামনের মোড়ে বা নিউ টাউনের অন্য কোনও রাস্তায় যানজট বা অন্য কোনও সমস্যা থাকলে সেই তথ্যও এলইডি পর্দায় ফুটে উঠবে। এর ফলে চালকেরা আগে থেকেই সচেতন হয়ে যেতে পারবেন। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই উন্নত ক্যামেরাগুলিতে রাতের ছবিও স্পষ্ট ধরা পড়বে। এমনকী, রাস্তার মোড়গুলোর কী অবস্থা তা কমিশনারেটের কর্তারা তাঁদের মোবাইলের সাহায্যে দেখতে পাবেন।
কিন্তু কবে বসবে ওই ক্যামেরা? বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসি সন্তোষ নিম্বলকরের দাবি, “কোন কোন মোড়ে কী ধরনের ক্যামেরা বসবে, তা নিয়ে কয়েকটি সফটওয়্যার সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা এগিয়েছে।”