মেট্রো-বিভ্রাটে সাজা হয় দিল্লিতে, নির্বিকার কলকাতা

দিল্লি পারে। কলকাতা পারে না। তাই বৃহস্পতিবার দু’মিনিটের জন্য এক দিকের দরজা খোলা অবস্থায় মেট্রো চলার ঘটনায় কাজে গাফিলতির অভিযোগে দুই কর্মীকে এক ঘণ্টার মধ্যেই সাসপেন্ড করেছেন দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কী ভাবে ও কেন যাত্রী সুরক্ষার অবহেলা করা হল— তার তদন্তও শুরু হয়েছে।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০১:০৭
Share:

দিল্লি পারে। কলকাতা পারে না।

Advertisement

তাই বৃহস্পতিবার দু’মিনিটের জন্য এক দিকের দরজা খোলা অবস্থায় মেট্রো চলার ঘটনায় কাজে গাফিলতির অভিযোগে দুই কর্মীকে এক ঘণ্টার মধ্যেই সাসপেন্ড করেছেন দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কী ভাবে ও কেন যাত্রী সুরক্ষার অবহেলা করা হল— তার তদন্তও শুরু হয়েছে।

কিন্তু দরজা খুলে মেট্রো দৌড়নোর ঘটনা তো রয়েছেই, কলকাতায় যাত্রী-বোঝাই মেট্রো দীর্ঘক্ষণ সুড়ঙ্গে আটকালেও তদন্তের নির্দেশ হয় না। ফলে চিহ্নিত করা যায় না দোষীদের। শাস্তিও পান না কোনও অফিসার বা কর্মী। উল্টে ঘটনাগুলিকে যান্ত্রিক ত্রুটি বলে দায়িত্ব শেষ করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এ দিন সকাল ৯-৪০ মিনিটে দিল্লি মেট্রোর হলুদ লাইনের একটি ট্রেন বাঁ দিকের দরজা খোলা অবস্থায় অর্জুনগড় থেকে ঘিতরনি স্টেশনে যায়। ওই স্টেশনে ট্রেন থামলে হইচই শুরু করেন যাত্রীরা। ছবি-সহ ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে দু’জনকে সাসপেন্ড করেন। দিল্লি মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক অনুজ দয়াল বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত ওই দুই কর্মী অর্থাৎ ট্রেনের অপারেটর (চালক) ও সহকারী এক লাইন পরীক্ষক যাত্রীদের সুরক্ষায় অবহেলা করেছেন।”

যান্ত্রিক বিভ্রাটে নানা সমস্যা এখন কলকাতা মেট্রোর নিত্যসঙ্গী। এসি রেক হোক বা সাধারণ ট্রেন, কখনও আঁধার হয়ে যাওয়া, কখনও আটকে পড়া, কখনও বা ধোঁয়া বেরোনো— বিপত্তি লেগেই রয়েছে। দরজা খুলে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশন মেট্রো চলার সাক্ষীও হয়েছে কলকাতা। প্রতি ক্ষেত্রেই তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু তা কোন দিকে এগোয়, দোষীরা চিহ্নিত হন বা শাস্তি পান কি না, এমন কোনও খবর নেই।

গত ২৩ জুন কলকাতা মেট্রোর সুড়ঙ্গে আটকে পড়ে ট্রেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে উদ্ধার পান যাত্রীরা। কিন্তু কার বা কাদের গাফিলতিতে এত বড় বিভ্রাট ঘটল, তা এখনও চিহ্নিত হয়নি। এমনকী ঠিক কী কারণে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে পড়েছিল, যাত্রীদের উদ্ধার করতেই বা অব্যবস্থা হয়েছিল কেন, সেটাও এখনও স্পষ্ট নয় কর্তৃপক্ষের কাছে।

কলকাতাও দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে পারে না কেন? সদুত্তর মেলেনি। এ দিনও ২৩ জুনের ঘটনার তদন্ত নিয়ে কর্তৃপক্ষ শুধু বলেন, ‘‘যান্ত্রিক ত্রুটিতে ট্রেন থেমে গিয়েছিল। তাতে আর কাকে দোষী করা হবে?’’ এর প্রেক্ষিতে এ শহরের মেট্রো যাত্রীদের বক্তব্য, ‘‘দিল্লির ঘটনা কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, প্রশাসনিক অবস্থা ঝরঝরে হয়ে যাওয়াতেই এখানে মেট্রোর এই হাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন