মেট্রোয় উঠতে গিয়ে আচমকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দরজা। আর তার ফাঁকেই আটকে যায় এক তরুণীর শাড়ি ও চাদরের কিছু অংশ। কোনওক্রমে ভিড় ঠেলে কামরায় ঢুকে দরজার ফাঁক থেকে আঁচল ও চাদরের অংশ বার করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিছুতেই তা হচ্ছে না দেখে অ্যালার্ম চেন টানেন অন্য যাত্রীরা। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফিরল না চালকের। অনেকক্ষণ পরে যাত্রীদের সহযোগিতায় দরজা ফাঁক করে আটকে থাকা চাদর ও কাপড়ের অংশ বার করে আনলেনওই তরুণী।
শুক্রবার বিকেলের এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে মেট্রোর ভিতরে থাকা প্যাসেঞ্জার অ্যালার্মের কার্যকারিতা নিয়ে। চলন্ত মেট্রোয় কোনও বিপদ ঘটলে চালকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই অ্যালার্ম রাখা হয়েছে। তবে এ দিনের ঘটনার পরে যাত্রীদের প্রশ্ন, “তাই যদি হয়, তবে অ্যালার্ম বাজালেও ট্রেন থামলো না কেন?” এ দিন না হয় তরুণীর পোশাক আটকে ছিল, তার বদলে কোনও যাত্রীর শরীরের অংশও তো আটকে থাকতে পারতো। কেউ অসুস্থ হতে পারতেন, কোনও বিপদও হতে পারত। তবে কোনও কিছুতেই অ্যালার্ম কাজ করত না বলেই মত যাত্রীদের।
লোকাল ট্রেনের মতো মেট্রো ছাড়ার আগেও নিয়ম মতো একটি বেল বাজানোর কথা। কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই চালকেরা বেল না বাজিয়ে নিজেদের খেয়াল মতো ট্রেন ছেড়ে দেন। অথচ বেল বাজালে এই ঘটনা ঘটার কথা নয়। প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। শুধু শাড়ি বা চাদর কেন, আচমকা দরজা বন্ধ হয়ে আগে অনেকবার যাত্রীদের হাত-পাও আটকে থেকেছে। কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই।
শুক্রবার দমদম থেকে কবি সুভাষগামী নন এসি মেট্রোতে তাড়াহুড়ো করে উঠতে গিয়েছিলেন মামণি দাশগুপ্ত নামে ওই তরুণী। তখনই দরজা বন্ধ হওয়ার সময়ে তাঁর শাড়ির আঁচল, চাদরের কিছু অংশ আটকে যায়। তখন রাহুল বিশ্বাস নামে এক যাত্রী প্রথমে প্যাসেঞ্জার অ্যালার্মটি টানেন। কিন্তু ট্রেন না দাঁড়িয়ে দমদম স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এর পরে বেলগাছিয়ায় ট্রেন দাঁড়াতেই ফের অ্যালার্ম বাজানো হয়। অভিযোগ, তখনও চালক দেখতে আসেননি। রাহুল বলেন, “বারবার অ্যালার্ম বাজালেও ট্রেন থামেনি। কেউ আসেননি। এই যদি যাত্রীদের সুরক্ষা হয় তো কিছু বলার নেই।” এর পরে শোভাবাজার স্টেশনে ঢোকার আগে কোনও মতে দরজার ফাঁক থেকে আঁচল ও চাদরের অংশ টেনে বার করেন মামণি। ততক্ষণে অবশ্য আঁচল কিছুটা ছিঁড়েও গিয়েছে। মামণি বললেন, “আবাক লাগছে, এত অ্যালার্ম বাজালেও চালক শুনতে পেলেন না।” কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মেট্রোর এক কর্তা বলেন, “এ রকম হয়েছে বলে শুনিনি, খোঁজ নিয়ে দেখছি।”