বিপজ্জনক চলাচল। ছবি: অরুণ লোধ
বছর ষাটের সুশান্ত ঘোষ নেতাজি মেট্রো স্টেশনের ঢাল পথ ধরে উঠছিলেন। হঠাৎ উল্টো দিক থেকে তীব্র গতিতে একটি মোটরসাইকেল নেমে আসে। হতচকিত সুশান্তবাবু নিজেকে সামলাতে না পেরে পড়ে যান। পা না ভাঙলেও, লিগামেন্টে চোট পান তিনি। একই ভাবে এই ঢালু রাস্তায় দু’টি বাইককে পাস কাটাতে গিয়ে পড়ে যান রমলা রায়। শুধু সুশান্তবাবু কিংবা রমলাদেবী নন, এই ঢাল পথে প্রতি মুহূর্তেই এই রকম সমস্যায় পড়েন মেট্রো যাত্রীরা।
নেতাজি মেট্রো স্টেশনটি টালি নালার উপরে তৈরি হওয়ায় অন্য মেট্রো স্টেশনগুলির চেয়ে অনেকটা উঁচুতে। তাই যাত্রীদের সুবিধার জন্য সিঁড়ি ছাড়াও ঢাল রাখা হয়েছে। বয়স্ক মানুষের সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠতে কষ্ট হতে পারে বলেই সম্প্রসারিত মেট্রো তৈরির সময়ে এই ব্যবস্থা করা হয়। মেট্রো যাত্রীরা জানান, মেট্রো কর্তৃপক্ষ সাধারণ যাত্রীদের কথা চিন্তা করে ঢাল তৈরি করলেও, পরে এলাকার সাইকেল এবং মোটরসাইকেল আরোহীরা নিজেদের সুবিধার জন্য পথটি বেশি ব্যবহার করছেন। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ঢাল পথটি মোটরসাইকেল কিংবা সাইকেল আরোহীদের জন্য তৈরি করা হয়নি।
নিত্যযাত্রীরা জানান, নেতাজি মেট্রো স্টেশন লাগোয়া ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি পুরবাজার রয়েছে। সেই বাজার লাগোয়া একটি ঢালাই ব্রিজ দিয়ে টালিনালা পারাপার করা যায়। কিন্তু দু’চাকার আরোহীরা তা ব্যবহার না করে মেট্রো স্টেশন এলাকা দিয়েই যাতায়াত করেন। যাত্রীদের অভিযোগ, সব সময়ই এত জোরে ঢাল দিয়ে মোটরসাইকেল এবং সাইকেল নিয়ে যাতায়ত করে যে ধাক্কা লাগে। প্রতিবাদ করে কোনও লাভ হয়নি। এক মোটরসাইকেল আরোহী জানান, ঢালাই ব্রিজটি কিছুটা দূরে, একটু ঘুরে যেতে হয়। তাই সবাই মেট্রোর ঢাল পথই ব্যবহার করেন।
প্রশ্ন উঠেছে মেট্রোর নিরাপত্তা নিয়েও। অন্য স্টেশনে যেখানে বেশিক্ষণ যান দাঁড়াতে দেওয়া হয় না, সেখানে নেতাজি মেট্রো স্টেশনে এ ভাবে মোটরসাইকেল এবং সাইকেল আরোহীদের যেতে দেওয়া হয় কী করে? মেট্রোর জন-সংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “প্রতিটি মেট্রো স্টেশনের মতো এখানেও রেলপুলিশ থাকেন। তবে স্টেশনের বাইরে দিয়ে মোটরসাইকেল এবং সাইকেল যাওয়া বন্ধ করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, দেখছি।”