মহানগর জুড়ে আজ মহাজটের আশঙ্কা

লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা বুধবার রাতে বলেন, ‘‘স্বস্তির কারণ একটাই। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ওই সভায় বক্তৃতা দেবেন। না হলে যত পুলিশি ব্যবস্থাই থাকুক, ভরসা নেই।’’আজ, বৃহস্পতিবার কাজের দিনে শহিদ মিনার ময়দানে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ‘জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ’-এর সভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০০:৪৫
Share:

লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা বুধবার রাতে বলেন, ‘‘স্বস্তির কারণ একটাই। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ওই সভায় বক্তৃতা দেবেন। না হলে যত পুলিশি ব্যবস্থাই থাকুক, ভরসা নেই।’’

Advertisement

আজ, বৃহস্পতিবার কাজের দিনে শহিদ মিনার ময়দানে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ‘জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ’-এর সভা।

সেই সঙ্গে আবার এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র আইন অমান্য কর্মসূচি। সদস্যদের কলেজ স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে আসার কথা। বিভিন্ন অননুমোদিত মাদ্রাসা-শিক্ষকেরাও হাজি মহম্মদ মহসিন স্কোয়ার থেকে মিছিল করে ধমর্তলায় আসবেন বলে জানান। তাঁদের একাংশ সিদ্দিকুল্লার সমাবেশে ঢুকে পড়তে পারেন ও তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হওয়ার আশঙ্কায় পুলিশ।

Advertisement

পরিস্থিতি সামাল দিতে ছ’হাজারের বেশি পুলিশ ধর্মতলা চত্বর ও আশপাশের বিভিন্ন রাস্তায় নামবে বলে জানিয়েছে লালবাজার। শহিদ মিনারে সভা শুরু দুপুর ১টায়। মুখ্যমন্ত্রী আসার কথা বিকেল ৩টেয়। কিন্তু সকাল সাড়ে ছ’টা থেকেই রাস্তায় নামবে পুলিশ।

কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) রাজীব মিশ্র বলেন, ‘‘শহরের বিভিন্ন বেড়ানোর জায়গা, বিনোদন কেন্দ্রেও মহিলা পুলিশ-সহ রক্ষীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। মানুষ যাতে অসুবিধেয় না পড়ে, আমরা দেখব।’’

গত বছর ২৯ নভেম্বর সিদ্দিকুল্লার সভার স্মৃতি এখনও তাড়া করছে পুলিশকে। সে দিন ধর্মতলা চত্বর রুদ্ধ হয়ে পড়েছিল, স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল উত্তর-দক্ষিণের বিস্তীর্ণ এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে সমাবেশে আসা জনতার হাতে জখম হন চার আইপিএস অফিসার-সহ ১০-১২ জন পুলিশ। এক যুগ্ম কমিশনারের গাড়ি ঢোকানো নিয়ে গোলমাল চরমে উঠেছিল। ভাঙা হয় পুলিশের গাড়ি। এ বছর তাই পুলিশকর্তারা গাড়ি রাখবেন সমাবেশস্থল থেকে কিছু দূরে।

গত বার সভা হয়েছিল শনিবার। কিন্তু এ বার পুরোদস্তুর কাজের দিনে সমাবেশে খাস অফিসপাড়ায় মানুষ যে যানজটে আটকাবেন, তা পুলিশ কার্যত ধরেই নিয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও তাদের ভয়, সভায় আসা লোকেদের একাংশ যদি বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে।

তবে এ বার সমাবেশের আয়োজক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী আশ্বাস দিয়েছেন, পুলিশকে সাহায্য করতে তাঁরা অনেক স্বেচ্ছাসেবক দেবেন। এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, স্বেচ্ছাসেবকেরা সহযোগিতা করলে কাজ হাল্কা হবে।

তবু যানজট যে এড়ানো যাবে না, তা পুলিশের একাংশ স্বীকার করছে। তাঁরা জানান, জওহরলাল নেহরু রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, এজেসি বসু রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মতো সমাবেশস্থলমুখী রাস্তায় প্রবল চাপ থাকবে। সমাবেশমুখী গাড়ির মিছিলের সামনে ও পিছনে পুলিশ থাকবে ও সেগুলি রাস্তার এক ধার দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা কতটা কার্যকর করা যাবে, সন্দিহান পুলিশই।

তবে এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘হাইকোর্টে যাতে বিচারপতিরা যেতে পারেন, তাই রেড রোড, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, গভর্নমেন্ট প্লেস ওয়েস্ট দিয়ে গাড়ি চলাচল মসৃণ রাখার চেষ্টা হবে।’’ স্ট্র্যান্ড রোড হাওড়া স্টেশনমুখীই থাকবে। সেখানে মিছিল ঢুকতে দেওয়া হবে না। সমাবেশে আসা লরি, বাস ও গাড়ি স্ট্র্যান্ড রোডে থাকবে। নিউ রোড দিয়ে ঢুকতে পারবেন শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী-সহ ভিআইপিরা।

পুলিশ জানায়, সমাবেশস্থলের ‘ডি জোন’ থেকে বুধবার রাতেই দোকানপাট তুলে দিয়ে নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হচ্ছে। ভিড়ের সুযোগে কেউ যাতে গণ্ডগোল না পাকাতে পারে, তাই এই তৎপরতা।

লালবাজার সূত্রে খবর, ডিএসও-র সমাবেশে তিন হাজারের বেশি লোক হলে তাদের রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে আটকে দেওয়া হবে। আর অননুমোদিত মাদ্রাসার শিক্ষকদের রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে মুসলিম ইনস্টিটিউটেই আটকে দেওয়ার জন্য এক জন ডেপুটি কমিশনারকে বহাল করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন